পদ্মা সেতুতে ১ জুলাই সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা টোল
পদ্মা সেতুতে গতকাল শুক্রবার সর্বাধিক ৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। চালুর পর এটাই টোল আদায়ের রেকর্ড। এদিন সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার করেছে ২৬ হাজার ৩৯৮টি।
এদিকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে গতকাল থেকে টোল আদায় শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, প্রথম দিনে ৬৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৮০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর মধ্যে যানবাহন পারাপার করেছে মোট ৪১ হাজার ৭১৪টি।
এর মধ্য ধলেশ্বরী সেতুর কাছের টোল প্লাজা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪। টোল আদায় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৪০ টাকা। আর ভাঙা দিয়ে যানবাহন পারাপার করেছে ১৫ হাজার ৬৫০টি। টোল আদায় করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪ হাজার ৬৪০ টাকা।
পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৩ হাজার ৮০১টি। টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৪২ হাজার ১০০ টাকা। জাজিরা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১২ হাজার ৫৯৭টি। টোল আদায় করা হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ১১ হাজার ১০০ টাকা।
এর আগে ২৬ জুন চালুর পর ১ দিনে ৬১ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করেছিল। আর টোল আদায় হয়েছিল প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা। তবে ওই দিন পার হওয়া যানবাহনের ৭৫ শতাংশ ছিল মোটরসাইকেল। ২৭ জুন থেকে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর যানবাহন ও টোল কমে যায়। গতকাল প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনে আবার যানবাহন বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) হিসাব, পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর প্রথম দিনে (২৬ জুন) ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা। উদ্বোধনের দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। যান চলাচলের দ্বিতীয় দিনে টোল আদায় করা হয়েছিল ২ কোটি ৭৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ টাকা।
যেভাবে খরচ হবে টোলের টাকা
এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা আছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ ফান্ডের অর্থ ৩০০ কোটি টাকা। এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। ফলে সেতু বিভাগকে আসল হিসেবে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। এর সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ হারে সুদ গুনতে হবে। অর্থাৎ সুদ-আসলে পরিশোধ করতে হবে ৩৬ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে টোলের টাকা ব্যয়ের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সেতুর সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণে টোল থেকে আয়ের সাড়ে ৭ শতাংশ ব্যয় হবে।
এর মধ্যে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের খরচও আছে। প্রতি ১০ বছর পরপর বড় ধরনের মেরামত করতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চালুর দশম বছরে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। ২০তম বছরে ব্যয় করতে হবে এক হাজার কোটি টাকা। ৩০তম ও ৪০তম বছরে ব্যয় হবে দেড় হাজার কোটি টাকা করে। আদায় করা টোলের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কাটা যাবে। অবচয় হবে মোট নির্মাণব্যয়ের ২ শতাংশ হারে। সব ব্যয় শেষে যে টাকা থাকবে, তা থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। আর কিস্তি পরিশোধের পর যে টাকা (মুনাফা) থাকবে, তার ওপর ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দেবে সেতু বিভাগ।
প্রতি ১৫ বছর পরপর টোল হার ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। সে হিসাবে ২০৫৩ সাল নাগাদ একটি প্রাইভেট কারের টোল ২ হাজার টাকার বেশি হবে।