তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে 'খ' তফসিল

প্রত্যর্পণযোগ্য অর্পিত সম্পত্তির তালিকা থেকে ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটি হলে এ ধরনের সম্পত্তি প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়ায় আসবে না। যার দখলে আছে, তার কাছেই থাকবে।
গত রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম, প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে এই সিদ্ধান্ত হয়। সংসদের চলতি অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট আইনটি সংশোধন করে বিল পাস হতে পারে।
ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্পত্তি ‘খ’ তফসিলভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। এসব সম্পত্তি ব্যক্তিমালিকানায় থাকলেও সরকার বিভিন্ন সময়ে অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মূল মালিকের দখলে আছে। কিছু বেদখলও হয়ে গেছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের জন্য সরকার ২০১১ সালে প্রত্যর্পণ আইন করে। এ জন্য জেলা পর্যায়ে ‘ট্রাইব্যুনাল’ ও ‘জেলা কমিটি’ সৃষ্টি করা হয়। এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত কমিটি ও ট্রাইব্যুনাল মিলিয়ে চার লাখ নয় হাজার ৯১৩ মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১১ হাজার ৩২৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। এই দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি করে। এখন সরকার চাচ্ছে, মূল মালিকের দখলে থাকা সম্পত্তি তার দখলে থাকবে। এখন আদালতের মাধ্যমে প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়া বন্ধ হবে।
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব নাগরিক এ দেশ থেকে ভারতে চলে যান, তাঁদের স্থাবর সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে নাম পরিবর্তন করে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্পিত সম্পত্তি মূল মালিক বা তাঁদের উত্তরাধিকারদের কাছে ফিরিয়ে দিতে একটি আইন করে। কিন্তু ক্ষমতা বদলের পর সেটি কার্যকর হয়নি। এবার ক্ষমতায় আসার পর আবারও সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠন ‘খ’ তফসিল বাতিলের দাবি করে আসছিল।
অনশন: অর্পিত সম্পত্তি ‘খ’ তফসিল সম্পূর্ণ বাতিল, প্রত্যর্পণে সব বাধা দূর করা এবং প্রস্তাবিত দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১৩ বাতিলের দাবিতে আজ সকাল-সন্ধ্যা অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই কর্মসূচি পালিত হবে।