টাঙ্গাইলে যৌনপল্লি উচ্ছেদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
‘যৌনকর্মীরা উচ্ছেদ হলে তো কারও কিছু যায়-আসে না। ঈদের আগে এই মুহূর্তে আমাদের বাচ্চাগুলো কোথায় যাবে? সেগুলো দেখার প্রয়োজন কেউ বোধ করে না।’
টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লি থেকে যৌনকর্মীদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্ক ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
১২ ও ১৩ জুলাই টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়া থেকে অসামাজিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ কমিটির নামে যৌনকর্মীদের উচ্ছেদ করা হয়। সেখানে ৮০৪টি ঘরে প্রায় ৯০০ যৌনকর্মী ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা পুনর্বাসন না করে যৌনপল্লি থেকে যৌনকর্মীদের উচ্ছেদ না করার দাবি জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইলে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের নামে এই উচ্ছেদ করা হলেও এর পেছনে মূলত জমি দখলের উদ্দেশ্য কাজ করেছে। টাঙ্গাইলের পৌরসভার মেয়র ও টাঙ্গাইলের একজন প্রভাবশালী সাংসদ এই উচ্ছেদের পেছনে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
তাঁরা অভিযোগ করেন, ১০ জুলাই তিন ঘণ্টার মধ্যে চলে না গেলে যৌনকর্মীদের পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ১২ জুলাই সন্ধ্যার পর কান্দাপাড়া এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রাণভয়ে সেদিন সন্ধ্যা থেকেই যৌনপল্লি থেকে চলে যান যৌনকর্মীরা।
দুর্জয় নারী সংস্থার যৌনকর্মী সমন্বয়ক শাহনাজ বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভোটের সময় তো আর বলে না ভোটটি যৌনকর্মীর। জমি দখলের সময়ই আমাদের পাপ-পুণ্য দিয়ে বিচার করে উচ্ছেদ করতে হয় কেন?’
সংবাদ সম্মেলনে যৌনকর্মীদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। যৌন পেশা বন্ধে রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি না করে যৌনকর্মীদের উচ্ছেদ না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বনির্ভর মহিলা সংস্থার আয়েশা আক্তার। এ ছাড়া নারীপক্ষ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), কেয়ার বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন, পিএসটিসি, দুর্জয় নারী সংঘ, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।