ছয় মাসের জামিন পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর, শিগগিরই মুক্তি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে ছয় মাস জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিন চেয়ে তাঁর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
অন্য কোনো মামলা না থাকায় এর ফলে কিশোর শিগগিরই মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে গত ২১ জানুয়ারি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদ। ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ।
১ মার্চ এই জামিন আবেদন শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। সেদিন মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়টি আদালতকে জানান তাঁদের আইনজীবী। আদালত মুশতাকের বিষয়ে লিখিত হলফনামা দিতে বলে শুনানি নিয়ে ৩ মার্চ আদেশের জন্য দিন রাখেন। এই অনুসারে আজ সংক্ষিপ্ত শুনানি নিয়ে আদেশ দেওয়া হলো।
আদালতে কিশোরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তাঁরাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুশতাক আহমেদ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।
২০২০ সালের আগস্ট মাস থেকে মুশতাক কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দী ছিলেন।
কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট কিশোর অসুস্থ বলে জানিয়েছিলেন তাঁর ভাই আহসান কবির। তিনি সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোর ও মুশতাকদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তখন তিনি কিশোরকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেন। তাঁকে কিশোর বলেছেন, গ্রেপ্তারের পর নির্যাতন করা হয়েছে, যার কারণে তাঁর পায়ে সংক্রমণ হয়েছে। কানে পুঁজ হচ্ছে। তাঁর ডায়াবেটিস অনেক বেড়ে গেছে। চোখেও কম দেখছেন। তাঁর দ্রুত চিকিৎসা দরকার।