এবারের কঠোর বিধিনিষেধে ‘মুভমেন্ট পাস’ও থাকবে না
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া কঠোর বিধিনিষেধে এবার পুলিশের ‘মুভেমন্ট পাস’ থাকবে না, তখন জরুরি সেবা ছাড়া মানুষ ঘর থেকেও বের হতে পারবে না।
গত ঈদুল ফিতরের আগে শুরু হওয়া বিধিনিষেধে পুলিশের পক্ষ থেকে অনলাইনভিত্তিক ‘মুভমেন্ট পাস’ চালু করা হয়েছিল। এই ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে মানুষ বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেত।
কিন্তু আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, এবার ‘মুভমেন্ট পাস’ থাকবে না। কেউ বের হতে পারবে না। তবে যাঁরা জরুরি কাজে জড়িত, তাঁরা বের হতে পারবেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ধরেন, দাফন-কাফন করতে হবে, সেটা তো বাসায় করা যাবে না, সে সময় বের হওয়া যাবে। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে বের হতে পারবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবার কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী টহলে থাকবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদের যতটুকু সম্ভব, ততটুকু কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই মানুষ যাতে বের হতে না পারে, সেটা তারা মনিটর করবে। কেউ কথা না শুনলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পোশাক কারখানা, রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা ও রিকশা চলবে কি না এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আগামীকাল বিস্তারিত নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে গতবারের মতো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় গরিব মানুষকে, বিশেষ করে শহরের গরিব মানুষকে সহায়তায় ব্যবস্থা নিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আজ সোমবারই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ বা লকডাউনে দরিদ্র, দুস্থ, অসচ্ছল ও কর্মহীন জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দিতে ৬৪ জেলার অনুকূলে ২৩ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। শর্তানুযায়ী জেলা প্রশাসকেরা বরাদ্দ করা টাকা ইউনিয়নওয়ারি দেবেন। ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের এই বরাদ্দ থেকে খাদ্যসহায়তা, যেমন চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।
এদিকে আজ সোমবার থেকে গণপরিবহন, শপিং মল ও মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিধিনিষেধ চলবে ১ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কিছু বাস্তব কারণে ৩০ জুন পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া যায়নি। এ জন্য ১ জুলাই থেকে শুরু হবে কঠোর বিধিনিষেধ। চলবে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে প্রয়োজন মনে হলে তা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হতে পারে বলেও জানান তিনি। বাস্তবায়ন কৌশলও ঠিক করা হয়েছে। আগামীকাল নোটিশ দিয়ে তা বিস্তারিতভাবে বলে দেওয়া হবে।