একনেকে ২১৭০ কোটি টাকার সাত প্রকল্প অনুমোদন
রাজধানীর উত্তরা এলাকার যানজট কমাতে সড়ক, পয়ঃনালা ও ফুটপাত সংস্কার করা হবে। এ জন্য ১১৯ কোটি টাকার উত্তরা মডেল টাউনের ১, ৩-১৪ নম্বর সেক্টরের রাস্তা, পয়ঃনালা ও ফুটপাতের উন্নয়ন ও নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এ প্রকল্পটি পাস করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এ প্রকল্পটির মেয়াদ ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ প্রকল্পে স্থানীয় মুদ্রায় দেওয়া হবে ৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর অবশিষ্ট ৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে।
সভায় জানানো হয়, উত্তরা এলাকার আব্দুল্লাহপুর ইন্টার সেকশন ঢাকার প্রবেশ মুখ। উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চল থেকে এ প্রবেশমুখ দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন উত্তরায় প্রবেশ করে। ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সোনারগাঁও জনপথ ক্রসিং উত্তরার বর্ধিত এলাকার এবং জসীমউদদীন ক্রসিং উত্তরার পূর্ব-পশ্চিম এলাকার প্রবেশ পথ। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৪৭ কিলোমিটার পয়ঃনালা নির্মাণ এবং ২১ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্প উত্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয় ওই এলাকার প্রকৃতি ও জনগোষ্ঠীর চাহিদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না করেই। হয়তো এলাকার জনগণ ওই স্লুইস গেট চান না, তবু নির্মাণ করা হয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে জানান, গোপালগঞ্জ জেলায় এমন ৭০টি স্লুইস গেট করা হয়েছে। ২০১০ সালে এমন একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। স্লুইস গেট নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলেও এখনো ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হয়নি। গোপালগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্তরা তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) কাছে এ নালিশ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি ওই প্রকল্পের পরিচালককে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি গোপালগঞ্জে কোনো স্লুইস গেট না রাখার নির্দেশও দেন।
এদিকে আজকের একনেকে ২ হাজার ১৭০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ৭টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয় মুদ্রায় ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, আর প্রকল্প সাহায্য হিসাবে ১৯১ কোটি ১১ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।
অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো ৭৬২ কোটি টাকার ল্যান্ড অ্যাকুইজেশন, ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন ফর পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, ১৪১ কোটি টাকার ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপশন প্রজেক্ট, ১২০ কোটি টাকার প্রমোশন অব সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস টু দ্য ডিজাবেলড পার্সনস ইন বাংলাদেশ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ১৩৮ কোটি টাকার সিলেট বিভাগ ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, ৪২১ কোটি টাকার কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্প এবং ২৭৪ কোটি টাকার পদ্মা নদীর ভাঙন হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আলাতুলি এলাকা রক্ষা (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।
আজকের সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।