আবেগ ছড়াল 'মুক্তিমিত্র'

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর। কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর অনেক সেনা নিহত হন। ধ্বংস হয় কয়েকটি ট্যাংক ও একটি বিমান। তবে মিত্রবাহিনীর পাল্টা হামলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরাজিত হয়।
এ স্মৃতি ধরে রাখতে ১৯৯০ সালে চৌড়হাস মোড়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দফায় দফায় নকশা পরিবর্তন এবং অর্থ ও নানা জটিলতায় তা এত দিন পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। উদ্যোগ নেওয়ার প্রায় ২৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার এ স্মৃতিস্তম্ভ আলোর মুখ দেখল। নাম দেওয়া হলো ‘মুক্তিমিত্র’। এ স্তম্ভ শুধু একাত্তরের ইতিহাসের জানান দেয়নি, মিত্রবাহিনীর আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে উপস্থিত সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয় আবেগ। আর তা উদ্বোধন করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায়।

তথাগত রায় বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আমি এই মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র ভূমিতে পা রাখতে পেরেছি, স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করতে পেরেছি। এটা করতে পেরে আমি অভিভূত। অভিভূত বললে কিছুই বলা হয় না, একটা অসাধারণ আবেগ আমার মধ্যে উঠে আসছে। আপনাদের দেশকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, এ ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও ভালো করবে। এর ফলে আজকের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারবে।

বাংলাদেশের জন্য সহযোগিতার হাত এক হাজার ভাগ এগিয়ে থাকবে এমন মন্তব্য করে তথাগত রায় বলেন, ‘যেকোনো কিছুতে যদি আমাদের বলেন, তাহলে আমাদের সহযোগিতার হাত এক শ নয়, এক হাজার শতাংশ এগিয়ে থাকবে।’
|তথাগত রায় বলেন, ‘আপনারা অসাধারণ লড়াই করে স্বাধীনতা পেয়েছেন। যে লড়াইতে আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকতে পেরেছি, ভারতীয় সেনাবাহিনী আপনাদের সঙ্গে থাকতে পেরেছে। সেই জন্যে আমরা গর্বিত।’
উদ্বোধনের সময় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ আবদুর রউফ, জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।