শিরোপা হাতে তামিম ইকবাল
শিরোপা হাতে তামিম ইকবাল

এমন পেস আক্রমণে সহজ তামিমের জীবন

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জেতা সিরিজে ২ ইনিংসেই বাংলাদেশের পেসাররা নিয়েছেন ১৬ উইকেট। দেশের মাটিতে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশের পেসাররা এর চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুবার। তবে ওই দুই সিরিজের একটিতে ছিল ৫ ইনিংস, আরেকটিতে ৩ ইনিংস। আজ আবার প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নিলেন বাংলাদেশের তিন পেসার মিলে।

স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক তামিম ইকবাল প্রশংসা করেছেন পেসারদের। তবে শুধু মাঠের পারফরম্যান্স নয়, এর বাইরে পেসারদের পরিশ্রমকে দারুণ কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, এমন পেস আক্রমণ থাকলে যেকোনো অধিনায়কেরই ‘জীবন সহজ হয়ে যায়’।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচসেরা হাসান মাহমুদকে নিয়ে এসেছিলেন তামিম। সেখানেই সিরিজে পেসারদের এমন পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘শুধু যদি এটা বলি যে ওরা দুর্দান্ত করেছে, অবিশ্বাস্য খেলেছে, তাহলে ভুল হবে। ওরা মাঠের বাইরে যে পরিমাণ পরিশ্রম করেছে, মাঠে তার ফলাফল পাচ্ছে। ওদের সাফল্য কোনো “ফ্লুক” নয়। ওরা নেটে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে।’

একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ

তামিম এরপর যোগ করেন, ‘এমন একটা পেস বোলিং বিভাগ থাকলে জীবন সহজ হয়ে যায়। তখন আপনি সব কন্ডিশনে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। পুরো পেস বোলিং বিভাগ নিয়েই গর্বিত আমি। হাসান পাঁচ উইকেট পেল বা অন্য কেউ চার বা তিন উইকেট পেল বলে নয়, গোটা সিরিজে তারা যেভাবে বল করেছে, তাতে আমি অত্যন্ত খুশি।’

তিন ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ না পেলেও ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। তিনটিতেই নতুন রেকর্ড গড়েছে তারা। সব মিলিয়ে এ সিরিজকে ‘পারফেক্ট’ মনে হচ্ছে তামিমের, ‘হ্যাঁ, আমার কাছে মনে হয়, “পারফেক্ট” সিরিজই বলতে পারি। যদি ঘাটতি জোর করে বের করতে হয়, তাহলে দ্বিতীয় ম্যাচ পরিত্যক্ত না হলে ভালো হতো। যা যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, আমরা সবই করেছি। আজও উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করা সহজ নয়, বিশেষ করে প্রথম ১৫-২০ ওভার খুবই কঠিন। আমরা প্রথম দুই ম্যাচে ওই চ্যালেঞ্জ নিয়েই বড় রান করেছি। দিন শেষে আমি অধিনায়ক হিসেবে খুবই তৃপ্ত, সব কটি বক্সেই টিক চিহ্ন দিয়েছি প্রায়।’

ইবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদের উদ্‌যাপন

সিলেটের তিন ম্যাচেই উইকেট ছিল ব্যাটিংসহায়ক। যদিও তামিম বলেন, দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিং বেশ কঠিন ছিল। বিশ্বকাপ ও সামনের সিরিজগুলোর কথা ভেবেই এমন উইকেটে খেলা, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘ইংল্যান্ডের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলামও, আপনারা দেখবেন, সামনে ওই ধরনের উইকেটে খেলব। চট্টগ্রামে একটি ওয়ানডে সে কারণেই ছিল। এখানে (সিলেট) উইকেটে ভালো পরিমাণ ঘাস রেখেছি। সাধারণত ঘাসের উইকেটে খুব বেশি খেলি না। বিশ্বকাপ ও সামনের সিরিজগুলোর কথা ভেবে এমন উইকেটে খেলা।’

এমন উইকেটে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যবধান কমে আসে উল্লেখ করে তামিম বলেন, দলের সবাই এ চ্যালেঞ্জ নিতে দারুণভাবে এগিয়ে এসেছে। আগের দুই ম্যাচে তিন পেসারের সঙ্গে দুই স্পিনারকে খেলালেও মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরায় আজ ছয় বোলার নিয়েই নেমেছিল বাংলাদেশ।

এ ধরনের উইকেটে আজকের মতো ছয়জন বিশেষজ্ঞ বোলার দরকার বলেও মত তামিমের, ‘মাঝেমধ্যে পাঁচ বোলার আর খণ্ডকালীন বোলার নিয়ে খেলা কঠিন হয়ে যায়, বিশেষ করে ভালো উইকেটে। বিশেষ করে যখন জানতাম, আমরা স্পোর্টিং উইকেটে খেলব। এ কারণেই ছয়জন বোলার নেওয়ার চিন্তা। এই প্রক্রিয়ার ভাবনা প্রথম ম্যাচ থেকেই ছিল। মিরাজ চোট না পেলে এই একাদশ নিয়েই প্রথম ম্যাচ খেলতাম। মিরাজের ব্যাটিং স্কিলে আমাদের আস্থা ছিল, ও দেখিয়েছে। মিরাজ এই আস্থার প্রতিদান দিলে সব সময় ছয় বোলার নিয়ে খেলা সহজ।’