বলুন তো কোনটি বড়?

সংখ্যা নিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান বেশ মজার। যেমন ১২৩৪৫৬৭৮৯০০৯৮৭৬৫৪৩২১ এই বিশাল বড় সংখ্যাটি ১১ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য কিনা বের করতে হবে। এত বড় ভাগ করা তো যে সে কথা নয়। কী করা যায়। এর একটা সহজ উপায় আছে। একটি নিয়ম আছে। সেটি জানা থাকলে একেবারে পানির মতো সহজ। নিয়মটি হলো যেকোনো সংখ্যার বিজোড় সংখ্যক অবস্থানের অঙ্কগুলোর যোগফল থেকে জোড় সংখ্যক অবস্থানের অঙ্কগুলোর যোগফল বিয়োগ করে প্রাপ্ত ফল যদি ১১ দিয়ে ভাগ করলে মিলে যায়, মানে কোনো অবশিষ্ট না থাকে, তাহলে পুরো সংখ্যাটি ১১ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে। এখন আমরা লক্ষ্য করছি প্রদত্ত সংখ্যাটি একটি প্রতিসাম্য ( প্যালিনড্রমিক )। এর প্রথম ১০টি অঙ্ক এবং শেষের ১০টি অঙ্ক ঠিক বিপরীত ধারায় সজ্জিত। তাই বিজোড় অবস্থানের এবং জোড় অবস্থানের অঙ্কগুলো একই হবে, শুধু বিপরীত ধারায় থাকবে। প্রথমে বিজোড় অবস্থানের অঙ্কগুলোর যোগফল বের করি। (১ ‍+ ৩ ‍+ ৫ ‍+ ৭ ‍+ ৯ ‍+ ০ ‍+ ৮ ‍+ ৬ ‍+ ৪ ‍+ ২) = ৪৫। এবার জোড় অবস্থানের অঙ্কগুলোর যোগফল = (২ ‍+ ৪ ‍+ ৬ ‍+ ৮ ‍+ ০ ‍+ ৯ ‍+ ৭ ‍+ ৫ ‍+ ৩ ‍+ ১) = ৪৫। এদের বিয়োগফল = (৪৫ –৪৫) = ০। এই ০ কে ১১ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ০। সুতরাং আমরা বলতে পারি ১২৩৪৫৬৭৮৯০০৯৮৭৬৫৪৩২১ এই বিশাল সংখ্যাটি ১১ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য। ভাগফলটিও একই কারণে প্রতিসাম্য। ভাগফল = ১১২২৩৩৪৪৪৫৫৪৪৩৩২২১১।

এবার বিরাট অঙ্কের বিষয়ে আরেকটি হিসাব দেখুন। আমরা বিশাল দূরত্ব প্রকাশ করতে একক হিসাবে ‘আলোকবর্ষ’ ব্যবহার করি। আলোক রশ্মি এক বছরে যত দূরত্ব অতিক্রম করে, সেটাই এক আলোকবর্ষ দূরত্ব। বুঝলাম, কিন্তু সেটি আসলে কত বড় দূরত্ব? এ সম্পর্কে একটি ধারণা দিই। সূর্য আমাদের পৃথিবী থেকে ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে। সেখান থেকে আলো আসতে লাগে ৮ মিনিট। তাহলে আলো প্রতি মিনিটে অন্তত ১ কোটি ১৫ লাখ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে। তাহলে ৬০ মিনিট বা ১ ঘণ্টায় যায় ৬৯ কোটি মাইল। বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুত গতির রকেটের এই দূরত্ব অতিক্রম করতে লাগবে অন্তত ৪ হাজার ২০০ ঘণ্টা। সুতরাং এক আলোকবর্ষ দূরত্ব অতিক্রম করতে রকেটের লাগবে ৪ হাজার ২০০ বছর। এ থেকে আমরা আলোকবর্ষের দূরত্ব সম্পর্কে একটি বোধগম্য ধারণা লাভ করতে পারি। যদি অদূর ভবিষ্যতে রকেটের গতি ৩–৪ গুণ বাড়ে, তাহলেও ১ আলোকবর্ষ দূরত্ব অতিক্রম করতে অন্তত এক–দেড় হাজার বছর লাগবে!

এ সপ্তাহের ধাঁধা
ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে চট করে বলুন তো ফ্যাক্টোরিয়াল ১০ (মানে ১০!) বড় নাকি ১০১০ বড়? এখানে বুঝিয়ে বলা যায়, যে কোনো সংখ্যার ফ্যাকটোরিয়াল হলো ১ থেকে শুরু করে সেই সংখ্যা পর্যন্ত প্রতিটি সংখ্যার ধারাবাহিক গুণফল।

খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর

ধাঁধাটি ছিল এরকম: ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে চট করে বলতে হবে ১০,০০০ কে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে কত অবশিষ্ট থাকবে?

উত্তর
১০,০০০ কে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকবে ১

প্রায় সবাই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম

উত্তর মুখে মুখে হিসাব করেই বের করা যায়। প্রথমে দেখব ১০১ কে কত দিয়ে গুণ করলে গুণফল ১০,০০০ এর চেয়ে ছোট এবং সবচেয়ে কাছের সংখ্যাটি পাওয়া যায়। এ উদ্দেশে ১০১ কে আমরা প্রথমে (১০০ ‍+ ১) হিসাবে লিখি। এখন ১০০ কে ৯৯ দিয়ে গুণ করলে হবে ৯৯০০ এবং ১ কে ৯৯ দিয়ে গুণ করলে হবে ৯৯। সুতরাং (১০১×৯৯) = (৯৯০০ ‍+ ৯৯) = ৯৯৯৯। এটা ১০,০০০ থেকে মাত্র ১ কম। সুতরাং আমরা বলতে পারি ১০,০০০ কে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হবে ৯৯ ও অবশিষ্ট থাকবে ১।

*আব্দুল কাইয়ুম: সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা