এমন দিন আসবে, ভাবেননি রমিজ

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। এশিয়া কাপের সেই ওয়ানডে ম্যাচে ‘পুঁচকে’ বাংলাদেশের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন রমিজ রাজা। ঠিক সে কারণেই কি না, বাংলাদেশের সাফল্য ঠিকমতো হজম করে উঠতে পারেন না। এর আগে বহুবার বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে নেতিবাচক কথা বলা রমিজ আবারও এমন মন্তব্য করেছেন, যেখানে বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর অবজ্ঞাই ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশ যে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটা ড্র করে ফেলল, এ নিয়ে প্রশংসা করতে যেন ভীষণ কৃপণ তিনি। তিনি বরং পাকিস্তানের দুর্বলতাই খুঁজে পাচ্ছেন, ‘৩০০ রানের মতো লিড পাওয়ার পরেও আমাদের দল যে বাংলাদেশকে ৫৫০ রানের বেশি করার সুযোগ দিল এটা খুবই হতাশার। জানি না আমাদের দেশের ক্রিকেট কোথায় যাচ্ছে। আমরা যদি টেস্টে বাংলাদেশকেই না হারাতে পারি, তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি? এমন ধারা চলতে থাকলে কে আমাদের খেলা দেখার আগ্রহ পাবে বা আমাদের খেলতে ডাকবে? পাকিস্তানের ক্রিকেটের ব্র্যান্ডকেই এটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
রজিমকে বাংলাদেশের সমর্থকেরা বলতে পারেন, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে ৫৫০ রানের বেশি করার ‘সুযোগ’ পাকিস্তান দেয়নি। বাংলাদেশ নিজ যোগ্যতাতেই আদায় করে নিয়েছে। সমর্থকেরা প্রশ্নই করতে পারেন, বাংলাদেশকে রমিজ ঠিক কোন শ্রেণির দল ভাবছেন, যাদের কাছে হেরে গেলে বাকি পৃথিবী সেই পাকিস্তানের খেলা দেখার বা খেলতে আমন্ত্রণ জানানোর অযোগ্য মনে করবে?
ভারতে বসে আইপিএলে ধারাভাষ্য দিতে ব্যস্ত রমিজ পাকিস্তানের জিয়ো জিও টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে অবশ্য বাংলাদেশের প্রশংসা করলেন। নাকি বাধ্য হলেন? তবে সেখানেও একটা ‘কিন্তু’ রেখে দিলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে ঠিকই, তাদের রণকৌশলটাও অন্য ধরনের। কিন্তু ৩০০ রানের লিড নিয়েও যদি আমাদের বোলাররা ওদের চাপে ফেলতে না পারে তাহলে আর করবেটা কী?’ এর পরেই অবশ্য রমিজ খুবই সত্যি কথাটা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটা পাকিস্তানের জন্য শিক্ষা হতে পারে।’
রমিজ অপমানের আসল তিরটা ছুড়লেন এর পরই। গতকাল টেস্টের শেষ দিনে কথায়-কথায় লেগে গিয়েছিল সাকিব আল হাসান আর ওয়াহাব রিয়াজের। রিয়াজ বিশ্বকাপে কথা চালাচালি করে ওয়াটসনকে বিদ্ধ করার পর থেকে যেন পণ করেছেন, ঘন ঘন এই অস্ত্র ব্যবহার করবেন। বাংলাদেশ সফরে সেই চেষ্টায় এখন পর্যন্ত ব্যর্থ এই পাকিস্তানি পেসার। কাল তো উল্টো ধমকই খেয়ে বসলেন সাকিবের কাছে। সাকিবও আঙুল উঁচিয়ে চোখে চোখ রেখেই পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গ টেনে রমিজ ব্যঙ্গ করে বলেছেন, এমনও দিন দেখতে হলো, যেদিন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে। একই প্রসঙ্গে আরেক সাবেক তারকা মোহাম্মদ ইউসুফ অবশ্য প্রশংসাই করলেন বাংলাদেশের, ‘সাকিব আর রিয়াজের মধ্যে আজ যা হলো, কয়েক বছর আগে এটা আপনি কল্পনাও করতে পারতেন না। এটা আজ হয়েছে, কারণ ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ হিসেবে তারা উন্নতি করছে।’ কালকের ম্যাচ নিয়ে ইউসুফের রায়, ‘আমরা ড্র করিনি, আমরা আসলে বাংলাদেশের কাছে হেরে গেছি।’
পাকিস্তানের ক্রিকেটের বহু নাটকের সাক্ষী ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘নয় নম্বর থেকে যদি পাকিস্তান ৯০০তম নম্বরেও নেমে যায়, তবুও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডে কিছুই বদলাবে না।’ সূত্র: পিটিআই।