ছয় গোলের মালা ও একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা
>পায়ে চোটের কারণে কিছুদিন আগেই ছিটকে গিয়েছেন ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার রবার্ট লেবানডফস্কি। তাঁকে ছাড়া বায়ার্ন কীভাবে খেলবে, প্রশ্ন ছিল। তবে লেবানডফস্কিহীন প্রথম ম্যাচেই সে প্রশ্ন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। হফেনহেইমকে হারিয়েছে ৬-০ গোলে
এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৩৩ ম্যাচ খেলে ৩৯ গোল করেছেন। লিগে ২৩ ম্যাচে করেছেন ২৫ গোল। বায়ার্নের জন্য লেবানডফস্কি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এই মৌসুমের প্রতিমুহূর্তে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। পায়ের চোটে পড়ে সেই পোলিশ তারকাই এখন মাঠের বাইরে। তাহলে? হবে কী বায়ার্নের! তবে সব শঙ্কা বায়ার্ন ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে লেবানডফস্কিহীন প্রথম ম্যাচেই। হফেনহেইমকে আধ ডজন গোলের মালা পরিয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।
সেদিন চ্যাম্পিয়নস লিগে চেলসির বিপক্ষে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন লেবানডফস্কি। দুটি গোল বানিয়ে দিয়েছিলেন, নিজে করেছিলেন একটি গোল। সে ম্যাচের পরেই দুঃসংবাদটা পায় বায়ার্ন। ফলে চেলসির বিপক্ষে ফিরতি লেগ তো খেলা হচ্ছেই না লিগে হফেনহেইম, শালকে, অগসবুর্গ, ইউনিয়ন বার্লিনের বিপক্ষেও খেলা হবে না তাঁর। চার সপ্তাহ থাকতে হবে মাঠের বাইরে। লেবানডফস্কির জায়গায় কে খেলবেন একাদশে? কোচ হান্সি ফ্লিক ভরসা রাখলেন আঠারো বছরের তরুণ স্ট্রাইকার জোশুয়া জিরকজির ওপর। কোচের আস্থার প্রতিদান বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন এই তরুণ। ছয় গোলের একটি গোল তাঁর।
তবে ম্যাচটি ছিল ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ফিলিপ কুতিনহোর ফিরে আসার উপলক্ষ। বার্সেলোনা থেকে বায়ার্নে ধারে আসা এ তারকা নিজেকে প্রমাণই করতে পারছিলেন না জার্মান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে। এই ম্যাচে জোড়া গোল করে নিন্দুকদের মুখ আপাতত থামিয়েছেন তিনি। বাকি গোলগুলো করেছেন জোশুয়া কিমিখ, সার্জ গেন্যাব্রি, লিওন গোরেৎজকা।
প্রথম থেকেই এদিন খুনে মেজাজে ছিল বায়ার্ন। টমাস মুলারের দুর্দান্ত এক ক্রসে গোল করে দলকে দুই মিনিটেই এগিয়ে দেন গেন্যাব্রি। সাত মিনিটে গোলের খাতায় নাম লেখান মিডফিল্ডার জোশুয়া কিমিখ। এবার গোলদাতা নয়, সহায়তাকারীর ভূমিকায় গেন্যাব্রি। পরের গোলটাও গেন্যাব্রির বানিয়ে দেওয়া। ১৫ মিনিটে দলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন স্ট্রাইকার জোশুয়া জিরকজি। এই নিয়ে মূল দলে চার ম্যাচ খেলে তিন গোল করা হয়ে গেল এই ডাচ স্ট্রাইকারের। ৩৩ মিনিটে নিজের প্রথম গোল করেন কুতিনহো। প্রথমার্ধ শেষ হয় ৪-০ ব্যবধানে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই টমাস মুলারের বাড়ানো বল থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের পঞ্চম গোল করেন কুতিনহো। পরের গোলটা মুলারের বিকল্প হিসেবে নামা মিডফিল্ডার গোরেৎজকার। পরে আর কোনো গোল হয়নি।
তবে ম্যাচের শেষ দিকে গোল উৎসব নয়, বরং অপ্রত্যাশিত একটা ঘটনা নিয়ে শোরগোল ওঠে স্টেডিয়ামে। হফেনহেইমের সমর্থকদের দিকে উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক ব্যানার নিয়ে আসা ও আপত্তিকর স্লোগান তোলার দায়ে ম্যাচ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখেন রেফারি। পরে খেলা শুরু হলেও সে ছন্দ আর ছিল না দুই দলের খেলার মধ্যেই। সমর্থকদের এমন আচরণের কারণে শাস্তির মুখে পড়তে পারে বায়ার্ন।
এই জয়ে লিগে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল। ২৪ ম্যাচে ১৬ জয় ও চার ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৫২। এক ম্যাচ কম খেলে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে আরবি লাইপজিগ। বেয়ার লেভারকুসেনকে লাইপজিগ হারাতে পারলেই আবারও বায়ার্ন চলে আসবে তাদের হাতছোঁয়া দূরত্বে।