যে কারণে বার্সেলোনায় আসতে পারেননি নেইমার
দলবদলের পুরো সময় জুড়ে পিএসজি ছাড়ার চেষ্টা করেছেন ব্রাজিল তারকা নেইমার। সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায় ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। কেন দলবদল করতে পারলেন না নেইমার? জানিয়েছেন তাঁর বাবা নেইমার সিনিয়র।
পিএসজিতে তারকা নেইমারের মন একদম বিষিয়ে উঠেছে। যে করেই হোক, পিএসজি ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। ফিরতে চেয়েছিলেন সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায়। কাতালান ক্লাবটিও আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে নেইমারকে ফেরাতে কোনো প্রস্তাব দিয়েই পিএসজির মন গলাতে পারেনি বার্সেলোনা। ফলে নেইমারকে থাকতে হয়েছে পিএসজিতেই। এদিকে নেইমারের ক্লাব ছাড়তে না পারার পেছনে একটি বিশেষ কারণকে দায়ী করেছেন নেইমারের বাবা।
নেইমার সিনিয়র বলেছেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে পিএসজির বর্তমান চুক্তিতে কোনো রিলিজ ক্লজের উল্লেখ না থাকাটাই কাল হয়েছে। এ কারণেই বার্সেলোনায় ফিরতে পারেননি নেইমার। রিলিজ ক্লজ হলো খেলোয়াড়ের সঙ্গে তাঁর ক্লাবের চুক্তিপত্রের এমন এক শর্ত, যেখানে উল্লিখিত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ ওই খেলোয়াড়ের প্রতি আগ্রহী কোনো ক্লাব পরিশোধ করলে বর্তমান ক্লাব তাঁকে আগ্রহী ক্লাবে বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে। নেইমার যখন বার্সেলোনায় ছিলেন, তাঁর রিলিজ ক্লজ তখন ছিল ২২২ মিলিয়ন ইউরো। বার্সা ভেবেছিল, ই আকাশচুম্বী রিলিজ ক্লজই যথেষ্ট হবে নেইমারকে দলে ভেড়ানোর আশায় থাকা যেকোনো ক্লাবকে দূরে রাখার জন্য। কিন্তু বার্সেলোনা তো আর জানত না, পিএসজি আর দশটা ক্লাবের মতো না। টাকা-পয়সা তাদের কাছে কোনো বিষয়ই না! ফলে রিলিজ ক্লজের পুরো ২২২ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করে নেইমারকে নিয়ে আসে পিএসজি।
এত খরচ করে, কাঠখড় পুড়িয়ে নিয়ে আসা খেলোয়াড়কে পিএসজি সহজে ছাড়বে না, সেটাই স্বাভাবিক। ফলে নেইমারের চুক্তিতে কোনো রিলিজ ক্লজ রাখেনি পিএসজি। আর এ রিলিজ ক্লজ না থাকাই সমস্যা হয়েছে নেইমারের ক্লাব ছাড়তে চাওয়ার পথে। এডিনবার্গ স্পোর্টস কনফারেন্সে গিয়ে এটাই জানিয়েছেন নেইমার সিনিয়র, ‘আমরা অনেক লড়াই করেছি ওকে পিএসজি থেকে বের করে নিয়ে আসার জন্য। পারিনি। এজেন্ট হিসেবে ব্যাপারটা অনেক পীড়াদায়ক, যখন আপনার মক্কেলের চুক্তিতে এমন কোনো শর্ত (রিলিজ ক্লজ) না থাকে, যা তাঁকে ক্লাব ছাড়তে সাহায্য করে। পিএসজি ওর চুক্তিতে কোনো রিলিজ ক্লজ রাখেনি। তাই ও পিএসজি ছাড়তে পারেনি।’
নেইমার যখন বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজি যোগ দিলেন, তখনই নেইমারের আইনজীবী মার্কোস মোত্তা জানিয়েছিলেন, নেইমারের চুক্তিতে কোনো রিলিজ ক্লজ নেই। তখন ব্রাজিলিয়ান রেডিও স্টেশন রেডিও গ্লোবোকে মার্কোস স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, নেইমারের চুক্তিতে রিলিজ ক্লজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।’
আর এ রিলিজ ক্লজ না থাকার বিষয়টাই এখন কুরে কুরে খাচ্ছে নেইমার ও তাঁর বাবাকে।