লর্ডসের মাঠকর্মী এখন লর্ডসে বিশ্বকাপ জেতার অপেক্ষায়!
>নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলতে কোচ গ্যারি স্টিডের অবদান কম নয়। রোববারের ফাইনালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্টিডের দল। অথচ ২৯ বছর আগে তিনিই কাজ করতেন লর্ডসের মাঠকর্মী হিসেবে!
ভাগ্য মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, জানতে চাইলে গ্যারি স্টিডকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। রোববার লর্ডসের ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা নিউজিল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্বে আছেন স্টিড। ভাগ্যের কী খেলা, বিশ্বকাপজয়ী কোচের তকমা গায়ে লাগাতে যে মাঠে কোচ ড্রেসিংরুমে থাকবেন, ২৯ বছর আগে সেই লর্ডসেই মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন স্টিড!
গত আগস্টে কিউইদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ৪৭ বছর বয়সী স্টিড। এক বছরও হয়নি, নিউজিল্যান্ডকে তুলে এনেছেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। পূর্বসূরি মাইক হেসনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলে এনেছেন স্টিড। অথচ ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ঠিক হওয়ার পর অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন, এবারও সেমিফাইনাল খেলা নিয়েই হয়তো সন্তুষ্ট থাকতে হবে নিউজিল্যান্ডকে। কিন্তু স্টিড ঠিকই নীরবে তাঁর কাজ করে গেছেন, আন্ডারডগ হয়েও দলকে তুলে এনেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালে।
ফাইনাল খেলতে এর মধ্যেই লর্ডসে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ড দল। স্মৃতিবিজড়িত মাঠে ফিরে যেন প্রায় তিন দশক আগে ফিরে যেতে চাইলেন স্টিড। ১৯৯০ সালের কথা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে এমসিসির (মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব) মাঠকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন স্টিড। কাজের অংশ হিসেবেই লর্ডসের প্যাভিলিয়নের জানালা পরিষ্কার করতে হতো তাঁকে। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বিভোর নিউজিল্যান্ড যখন রোববার মাঠে নামবে, সেই স্টিড তখনো থাকবেন লর্ডসের ব্যালকনিতে। পার্থক্য একটাই, এবার আর মাঠকর্মী হিসেবে নয়, স্টিড ব্যালকনিতে থাকবেন ফাইনাল খেলা দলের কোচ হিসেবে।
পুরোনো সেই স্মৃতি গণমাধ্যমের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ড কোচ, ‘আমি যথেষ্ট ভাগ্যবান ছিলাম, সেই ১৯৯০ সালে এই মাঠে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হতো আমাকে। জানালা পরিষ্কার করতে হতো, স্কোরকার্ড ও চিঠিপত্র আদান-প্রদান করতে হতো, স্কোর বক্স সামলানোর দায়িত্বও পালন করতে হতো কখনো কখনো। আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল সেসব। লর্ডসে ফিরে আসাটা আমার জন্য তাই সব সময়ই বিশেষ কিছু। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখানে খেলেছিলাম, সেটিও দারুণ ছিল। তবে ফাইনালের আবহ এই অনুভূতিকে আরও বিশেষ বানিয়ে দিচ্ছে।’
ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মোকাবিলা করতে হবে স্টিডের দলকে। মাঝে কিছুটা চাপে পড়লেও শেষ তিন ম্যাচে জিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এউইন মরগানের দল। স্টিডও স্বীকার করে নিয়েছেন, ফাইনালের জন্য ইংল্যান্ডই ফেবারিট। তবে ফেবারিট হওয়ায় চাপটাও স্বাগতিকদের ওপরেই বেশি থাকবে, সেটিও বললেন, ‘কে ফেবারিট এসব নিয়ে অনেক কথা হবে। কিন্তু দিন শেষে খেলাটা তো ক্রিকেটই। দুই দলের ওপরই চাপ থাকবে। কারা চাপ সামলাতে পারছে, সেটিই সবকিছু ঠিক করে দেবে। দুই দলের কেউই কখনো ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতেনি, এটিই সবচেয়ে আগ্রহ–জাগানিয়া বিষয়। তবে ইংল্যান্ড এবং ভারতকেই যেহেতু টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ফেবারিট ভাবা হচ্ছিল, চাপটা তাই সম্ভবত ইংল্যান্ডের ওপরেই বেশি থাকবে।’