আজ বাংলাদেশই ফেবারিট
শুনেছি, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের আকাশের মেঘ প্রথম আলোতে লেখা আমার কলাম সবটা না পড়লেও, লেখার শিরোনামটা পড়ে। শুধু আমার ক্রিকেটভাষ্য জানার আগ্রহে ইংল্যান্ডের মেঘ বাংলা শিখেছে—এটা আমাদের সবার জন্যই একটা আনন্দের খবর, সকল বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্যই গর্বের বিষয়।
বৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি ‘অ্যাবানডন্ড’ বা পরিত্যক্ত হলে আমি লিখেছিলাম ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে/ রান দেব মেপে’।
ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধে গুগল আমার লেখার শিরোনামটি ইংলিশে অনুবাদ করে দিলে বিশ্বকাপের কর্মকর্তাদের একজন তা ইংলিশ মেঘের কাছে পাঠিয়ে দেন। ইংল্যান্ডের, বিশেষ করে ব্রিস্টলের আকাশে উড়তে থাকা মেঘদল আমার লেখা পড়ে খুশি হয় এবং পরদিনের নির্ধারিত (ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড) খেলাটিকে বৃষ্টিতে ধুয়েমুছে একেবারে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। ব্রিস্টল নামটির মধ্যেই যে বৃষ্টি শব্দটি ঘাপটি মেরে আছে, এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আগে এই দিকটায় কারও নজর পড়েনি। ব্রিস্টলের সন্ধিবিচ্ছেদ করলে কী দাঁড়ায় আসুন দেখি। বৃষ্টি+অল=বৃষ্টল। অল মানে তো আমরা সবাই জানি। অল মানে সকল।
সকলের জন্য বৃষ্টি, সকল সময়ের জন্য বৃষ্টি।
একটি বলও গড়াল না ব্রিস্টলের মাঠে। একটি করে মহামূল্যবান পয়েন্ট যোগ হলো ভারত ও নিউজিল্যান্ডের তহবিলে।
বৃষ্টির কারণে ক্রমাগত, উপর্যুপরি খেলা না হওয়ার কারণে চলতি ২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আইসিসি এবং ইংলিশ ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই তাদের সহ্যের সীমা লঙ্ঘন করে গেছে বলে শুনেছি।
রিজার্ভ ডে কেন রাখা হয়নি, সেই প্রশ্ন এখন আর দর্শক ও বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই।
আইসিসিও কপালে হাত দিয়ে এখন সেই কথা ভাবছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি।
আমার ওই বিশ্বস্ত সূত্রটি কী, এটা নিয়ে প্রশ্ন করার রেওয়াজ নেই বলেই কথাটা বললাম।
ক্রিকেটকে ইনডোর খেলার তালিকাভুক্ত করার চিন্তাভাবনাও চলছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি।
ইংল্যান্ডে ক্রিকেটের ইনডোর স্টেডিয়ামও আছে। সেখানে বিভিন্ন সময়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজনও করা হয় বলে বিসূ-এ শুনেছি।
আমার ক্রিকেট অনুরাগী একজন বন্ধু একটা ভালো পরামর্শ দিয়েছেন এই বৃষ্টিহেতু সৃষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য।
তিনি বলছেন, পরিত্যক্ত খেলার পয়েন্ট দুই দলের মধ্যে ভাগ করে না দিয়ে, ফলাফল স্থগিত রাখা হোক। ধরা যাক, লিগ শেষে পরিত্যক্ত খেলার সংখ্যা দাঁড়াল ৭। কম–বেশিও হতে পারে। এই সাতটি খেলা দিনে–রাতে দুটো করে খেলা দিয়ে তিন সাড়ে তিন দিনের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব। তাতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করার মতো একটা বাজে প্রথার হাত থেকে বিশ্ব ক্রিকেটকে মুক্ত করা সম্ভব হবে। দ্বাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী দলগুলো সবাই সম্মত হলে, আমি মনে করি এখনো এটি করা যেতে পারে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা দেখে যে ভয়টা পেয়েছিলাম, সেই ভয়টাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্থায়ী রূপ দিতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়ে হেরেছে বটে, কিন্তু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে আমার ধারণা হয়েছে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ ম্যাচে বাংলাদেশই ফেবারিট।
জয় বাংলা।