খুনোখুনি বেধে গিয়েছিল হরভজন ও ইউসুফের মধ্যে!
বিশ্বকাপে আগামীকাল মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। পাক-ভারত ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। ২০০৩ বিশ্বকাপে খেলার মধ্যাহ্নবিরতিতে বিবাদে জড়িয়েছিলেন হরভজন সিং ও মোহাম্মদ ইউসুফ।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আর আট-দশটা ম্যাচের চেয়ে আলাদা আমেজ। দুই বৈরী দেশ মাঠে নামার আগে রাজনীতি চলে আসাটা পরিণত হয়েছে অলিখিত নিয়মে। সাবেক থেকে বর্তমান খেলোয়াড়েরা মুখের কথায় একে অপরকে ঘায়েল করার ঘটনাও স্বাভাবিক। কারও কারও কাছে এটা শুধু একটা ক্রিকেট ম্যাচই না, যেন আত্মসম্মানের লড়াই। মাঠে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষার মধ্যেও যুদ্ধংদেহী মনোভাব। পাক-ভারত ম্যাচ নিয়ে দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে অতীতে ঘটে গিয়েছে কত উত্তেজনার ঘটনা।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে কেন্দ্র করে ২০০৩ বিশ্বকাপের একটি উত্তেজনা ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন ভারতের সাবেক স্পিনার হরভজন সিং। ১৬ বছর আগে বিষয়টি এত দূর গড়িয়েছিল যে, সেখানে দুই দলের বাকি সিনিয়র খেলোয়াড়েরা উপস্থিত না থাকলে রক্তারক্তিও হয়ে যেত পারত! ম্যাচের বিরতিতে হরভজন ও মোহাম্মদ ইউসুফের মধ্যে ঘটেছিল সেই দুর্ঘটনা।
যদি ওয়াসিম আকরাম ও রাহুল দ্রাবিড়রা না থামাতেন, ঘটনা গড়াতে পারত অনেক দূর। কারণ হরভাজন ও ইউসুফ দুজন দুজনের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন কাঁটাচামচ হাতে নিয়ে। ১৬ বছর আগে ঘটনা প্রসঙ্গে হরভজন বলেন, ‘দুপুরের খাবার সময় আমি যে টেবিলে বসেছিলাম, অন্যদিকে মুখোমুখি বসেছিলেন ইউসুফ ও শোয়েব আক্তার। আমরা পাঞ্জাবি ভাষায় কথা বলছিলাম। মজার মধ্যে হঠাৎ আমার ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেন ইউসুফ। আমিও পাল্টা জবাব দিয়েছিলাম। কেউ কোনো কিছু আন্দাজ করার আগেই কাঁটাচামচ হাতে নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করতে চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়েছিলাম।’
এর পরে বিষয়টি গড়াতে পারত অনেক দূর। কিন্তু তা না হওয়ার পেছনে কৃতিত্ব দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের উপস্থিতি, ‘দ্রাবিড় ও শ্রীনাথ (জাভাগাল) আমাকে ঠেকিয়েছিলেন। ইউসুফকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ওয়াসিম (আকরাম) ভাই ও সাঈদ (আনোয়ার) ভাই।’
এর পরে কেটে গিয়েছে ১৬ বছর। দুজনের মধ্যে সেই আক্রমণাত্মক তেড়ে যাওয়ার গল্পটা পেছনে ফেলে এখন দুজন ভালো বন্ধু। তবে সেদিনের ঘটনায় এখন হরভাজনের কণ্ঠে অনুশোচনা, ‘ইউসুফের সঙ্গে এখন দেখা হলে ওই মুহূর্তটার কথা ওঠে। দুজনেই বুঝি কত বড় ভুল করেছিলাম।’
১৬ বছর আগের অনাকাঙ্ক্ষিত গল্পটা এখন আসছে কেন? কারণ বিশ্বকাপে আগামীকাল ম্যানচেস্টারে মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। আরও একটি পাক-ভারত ম্যাচের আগে হরভাজন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গল্প দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, পাক-ভারত ম্যাচের উত্তাপ কোন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তবে শুধু উত্তেজনায় নয়। দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণও আছে অহরহ। তেমন একটি গল্পও শুনিয়েছেন, ‘শহীদ আফ্রিদি ও শোয়েব আখতার আমার ভালো বন্ধু। একসঙ্গে ঘুরেছি, দুপুরে খাবার খেয়েছি। কিন্তু মাঠে নামলে আর কোনো বন্ধুত্ব থাকে না।’