আবারও জুটি বাঁধছেন রোনালদো-মরিনহো?
গত ছয় মাস বেশ আরামে কাটছে হোসে মরিনহোর। কোচিংয়ের হাজারো দুশ্চিন্তা নেই, বিইন স্পোর্টসে ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে বেশ চমৎকার সময় কাটাচ্ছেন। স্পেশাল ওয়ানকে ফুটবল মাঠে দেখা যায় না প্রায় ছয় মাস হতে চলল। তবে নতুন মৌসুমেই তাঁর দেখা মিলবে ডাগ-আউটে। সেটাও তুরিনের বুড়িদের ডাগ আউটে!
পাঁচ বছর জুভেন্টাসে কাটানোর দলের দায়িত্ব ছেড়েছেন মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। কোচের পদ থেকে নিজেই সরে দাঁড়িয়েছেন। পাঁচ বছর পাঁচবার লিগ, চারবার কোপা ইতালিয়া ও দুবার সুপারকোপা জিতিয়েও মন পাননি ক্লাবের। কারণ, জুভেন্টাসের মূল লক্ষ্য যে চ্যাম্পিয়নস লিগ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও সে কারণেই আনা। তাতেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি। এবার বিদায় নিতে হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।
আয়াক্সের বিপক্ষে হারের দাগ শুকায়নি জুভেন্টাসের। মরিনহোকে দলে টানার ইচ্ছেটা মূলত সেখান থেকেই। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাড়া কাটানোর জন্য মরিনহোর থেকে ভালো কোচ নেই বললেই চলে। এফসি পোর্তোকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন, ইন্টার মিলানে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফেরত এনেছেন ৪৫ বছর পর। শেষ ষোলোর ফাড়া কাটাতে না পারা রিয়াল মাদ্রিদকে সেমি ফাইনালে তুলেছেন ৯ বছর পর। চ্যাম্পিয়নস লিগে ভালো করার জন্য মরিয়া জুভেন্টাসের পছন্দের তালিকায় তাই মরিনহো সবার ওপরে।
মরিনহোর সঙ্গে ইতালির সম্পর্ক বেশ পুরোনো। ইতালিতে ছিলেন ইন্টার মিলানের কোচ হিসেবে। দুই মৌসুমই যথেষ্ট ছিল ইতালি জয় করার জন্য। ‘স্পেশাল ওয়ান’-এর অধীনে শেষ বছরে ইন্টার জিতেছিল ট্রেবল। ব্যাক টু ব্যাক ‘সিরি আ’ তো আছেই।
চ্যাম্পিয়নস লিগের এই মৌসুমেই মুখোমুখি হয়েছিল জুভেন্টাস আর মরিনহো। প্রথম লেগে ভালো কিছু করতে না পারলেও ফিরতি লেগে কিন্তু নিজেকে ঠিকই জানান দিয়েছেন মরিনহো। জুভেন্টাসের ঘরে জুভেন্টাসকে ২-১ গোলে হারিয়ে ব্যঙ্গাত্মক এক উদ্যাপন করেছিলেন মরিনহো।
বিইন স্পোর্টসে বিশেষজ্ঞ হিসেবেই দিন কাটছে মরিনহো। সেখানে ফুটবলে নিয়ে ভবিষ্যৎ ইচ্ছার ব্যাপারে বেশ বড় ফিরিস্তি শোনাচ্ছেন ইদানীং। তাঁর মনের মতো খেলোয়াড়, খরচ করার সামর্থ্য না পেলে দলে ফেরার ইচ্ছে নেই। জুভেন্টাস অবশ্য সেদিক দিয়ে মরিনহোর মনের মতোই দল। মাদ্রিদে মরিনহোর অস্ত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আছেন এখন তুরিনে। প্রতিআক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলা মরিনহোর জন্য রোনালদোর চেয়ে ভালো অস্ত্র পাওয়া সম্ভব নয়। মাঝমাঠের তারকাও আছেন অনেক। এমনকি চাইলে হাত খুলে খরচও করতে পারবেন মরিনহো। সব মিলে মরিনহো ও জুভেন্টাসের জুটিটা সব দিক দিয়েই পরিপূর্ণ।
একটাই সমস্যা, জুভেন্টাসের মালিকপক্ষের সুনজরে নেই মরিনহো। মোরাত্তি ফ্যামিলির প্রধান মরিনহোর সঙ্গে জুভেন্টাসের গুজব নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট। তবে ভেতরে-ভেতরে কাজ যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে তা–ও বোঝা গিয়েছে তার কথায়, ‘মাঝেমধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে, যা আপনি কখনো চাইবেন না সত্যি হোক। কিন্তু সে ব্যাপারে কিছু করার থাকে না।’
সব মিলিয়ে মরিনহো-রোনালদো জুটি এখন সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।