পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধটা বিশ্বকাপেই জিততে চান শেবাগ
খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেশাবেন না, এই তত্ত্বের দাবিদাররা চান না, বিশ্বকাপে পাকিস্তান ম্যাচটা বয়কট করুক ভারত। বীরেন্দর শেবাগও চান, ১৬ জুন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মুখোমুখি হোক ভারত-পাকিস্তান। তবে শেবাগ সেটি চাইছেন খেলার সঙ্গে রাজনীতি খুব করে মিশিয়েই। শেবাগের কাছে, এই ম্যাচটি ম্যাচ নয়—যুদ্ধ! আর এই যুদ্ধে ভারত কেন ওয়াক ওভার দেবে!
গতকাল শুক্রবার টাইমস নেটওয়ার্কের লিডারশিপ সামিটে দেওয়া বক্তব্যে শেবাগ বলেছেন, ‘এই ম্যাচটা যুদ্ধের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। আপনার যুদ্ধটা জেতাই উচিত, হারলে চলবে না।’ ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে চলে গেছে। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার শিকার হওয়ার জবাব ভারত দিয়েছে বালাকোটে ত্বরিত বিমান আক্রমণ করে। এর মধ্যেই ভারতজুড়ে দাবি উঠেছে, আগামী ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দল যেন পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলে।
শেবাগের মূল ভাষণের বিষয় অবশ্য ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছিল না। সম্মেলনের বিষয়বস্তুই ছিল নেতৃত্ব নিয়ে। ক্রিকেট নেতার খেলা। ইংরেজিতে বলে ক্যাপটেনস গেম। এখানে একজন অধিনায়কের ওপর নির্ভর করে ম্যাচের ভাগ্য। ক্রিকেটের অধিনায়ককে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে তুলনা করে শেবাগ বলেছেন, ‘নেতাকে জানতে হবে কীভাবে তাঁর সহকর্মীরা শতভাগ উজাড় করে দেবেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজ করেন না, কাজ করেন অধীনস্ত ব্যক্তিরা। কিন্তু সিইও জানেন কীভাবে কাজটা করিয়ে নিতে হয়।’
অধিনায়ক হিসেবে শেবাগের ততটা সুনাম ছিল না, নিজে নেতৃত্ব নিয়ে ব্যাকুলও ছিলেন না। শেবাগ ক্রিকেটের নেতৃত্বগুণ বোঝাতে ভারতের দুজন অধিনায়কের কথা বলেছেন। মহেন্দ্র সিং ধোনি ও সৌরভ গাঙ্গুলী। এই দুজন অধিনায়কের নেতৃত্ব ভারত এমন দুটি দল পেয়েছিল, যাঁদের জন্য সতীর্থেরা শতভাগ উজাড় করে দিতেন।
ধোনির নেতৃত্বগুণের টাটকা উদাহরণ দিতে এবারের আইপিএল প্রসঙ্গ টেনেছেন শেবাগ, ‘এখন পর্যন্ত, আইপিএল যখন চলছে, এম এস ধোনিকে আমরা সেরা অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করি। কারণ সে তার খেলোয়াড়দের ভেতর থেকে কাজটা বের করে আনতে পারে। না হলে দেখুন, ওদের বোলিং আক্রমণ এবারের মৌসুমে সবচেয়ে দুর্বলগুলোর একটি। ওর দলের একজন বোলারের নাম বলুন যে কিনা জাতীয় দলে আছে? ধোনি কিন্তু ওই বোলারদের ভেতর থেকেই কাজটা বের করে আনছে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করে।’
তবে বলার মতো নেতা বলতে শেবাগের কাছে সব সময়ই অন্য রকম মর্যাদা পাবেন দাদা! সৌরভের অধীনেই যে শেবাগ-যুবরাজ-জহিররা নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে পেরেছিলেন। শেবাগ বলেছেন, ‘নেতা এমন একজন, যার জন্য বাকিরা প্রাণ দিয়ে কাজটা আদায় করে দেবে। এটাও একটা প্রতিভা, যেটা ভারতের ক্রিকেটে খুব কম মানুষের মধ্যে ছিল। সৌরভ গাঙ্গুলী ছিলেন সেই দুর্দান্ত অধিনায়কদের একজন, যিনি ম্যাচ-পাতানো কেলেঙ্কারির ধাক্কার পর একটা ভালো দল গড়ে তুলেছিলেন। আর সেই দলটা বিদেশের মাটিতে টেস্ট আর টুর্নামেন্ট জিততে শুরু করেছিল।’