বিকেএসপি 'কিশোর'দের কাছে অভিজ্ঞদের হার
>উত্তরার পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে আজ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। অনভিজ্ঞ, তারুণ্যনির্ভর এ দল পাঁচ ম্যাচে দুই জয় পেয়েছে। বিকেএসপির পারফরম্যান্স মুগ্ধ করার মতোই
এ দলের ক্রিকেটারদের কতই বা বয়স! দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ও অধিনায়ক আকবর আলীর বয়সই ১৭ বছর ১৬৬ দিন। দলের গড় বয়স হতে পারে বড় জোর ১৬। কৈশোরের গন্ধ এখনো তাদের গায়ে! বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) এ কিশোররাই আজ হারিয়ে দিয়েছে অভিজ্ঞদের। মিরপুরে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ব্রাদার্সের বিপক্ষে ২ রানে জয় পেয়েছে বিকেএসপি। আট বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ফিরে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়।
২৬৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শেষ দুই ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল ব্রাদার্সের। হাতে ৫ উইকেট। ৪৯তম ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন মুকিদুল। এরপর ৬ বলে ১২ রানের চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেনি ব্রাদার্স। শেষ পর্যন্ত ২৬৫ রানে থেমে যায় গোপীবাগের দল।
বলা যায় মিরপুরে চমকই দেখিয়েছে বিকেএসপি। মাত্র ২৫ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটা শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ায় প্রবল প্রতাপে। টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ভুলিয়ে দিয়েছে মিডল অর্ডার। চতুর্থ উইকেটে আমিনুল-শামীমের ৭১ বলে ৬৬ রানের জুটিতে প্রথম প্রতিরোধ। এরপর অধিনায়ক আকবর আলী (৫৬) ও পারভেজ হোসেনের (৬৯) দৃঢ়তায় ২৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। ষষ্ঠ উইকেটে আকবর-পারভেজ মিলে গড়েছেন ৯০ রানের জুটি। এতেই লড়াই করার পুঁজি পায় খেলোয়াড় তৈরির কারখানা বিকেএসপি।
অভিজ্ঞদের নিয়ে ব্রাদার্স চ্যালেঞ্জটা ভালোভাবেই নিয়েছিল। বিশেষ করে ভারতীয় ব্যাটসম্যান চিরাগ জানি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে পেসার মুকিদুল ইসলাম ওপেনার মিজানুর রহমান ও তিনে নামা ফজলে মাহমুদকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর বিকেএসপি জয়টা সহজ ভেবে থাকতে পারে। প্রতিরোধ গড়লেন ওই চিরাগ। সঙ্গে কখনো ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিক (৫২), কখনো বা ইয়াসির আলী (৩৮)। কিন্তু দলের ২৫২ রানে চিরাগের (৯৬) আউট ধস নামায় ব্রাদার্স ইনিংসে। শরীফুল্লাহ (৪২ *) ছাড়া সেই ধস থামাতে এগিয়ে আসেননি কেউ। মাত্র ১৩ রানে পড়ে ইনিংসের শেষ ৫ উইকেট। শুরুর মতো শেষেও তোপ দেগেছেন মুকিদুল।
প্রায় এক যুগ আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সাকিব আল হাসান-মুশফিক রহিমেরা বিকেএসপির জার্সিতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন। তাঁদের বিদায়ের পর হাল ধরেছিলেন নাসির হোসেন, এনামুল হকেরা। কিন্তু এরপর থেকেই একটা শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় ২০১১ সালে অবনমন হয় দলটির। পরে টানা পাঁচ মৌসুম প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেললেও ওঠা যাচ্ছিল না আর প্রিমিয়ারে। অবশেষে সাত বছর পর খেলোয়াড় তৈরির প্রতিষ্ঠানটির পতাকা এবার উড়ছে ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আর ফিরেই জানান দিচ্ছে নিজেদের উপস্থিতি। আজকের জয়ে ৫ ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের আটে বিকেএসপি।