বিগ ব্যাশের ক্রিকেটার হারালেন শারাপোভাকে!

শারাপোভাকে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছেন বার্ট। ছবি: এএফপি
শারাপোভাকে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছেন বার্ট। ছবি: এএফপি
>

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কাল চতুর্থ রাউন্ডে অ্যাশলে বার্টের কাছে হেরেছেন পাঁচবারের গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন মারিয়া শারাপোভা। বার্টের আরেক পরিচয়, তিনি ক্রিকেটার ছিলেন

১৯৯৯ সালে যখন প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম হিসেবে ইউএস ওপেন জেতেন সেরেনা উইলিয়ামস, দায়ানা ইয়েস্ত্রমস্কার তখন জন্মই হয়নি। ১৮ বছর বয়সী এই ইউক্রেনিয়ান প্রতিযোগীকে যদি তারুণ্যের প্রতীক ধরা হয়, ৩৭ বছর বয়সী সেরেনা অভিজ্ঞদের প্রতিনিধি। অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারুণ্যের লড়াইয়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন ইয়েস্ত্রমস্কা। মার্গারেট কোর্টের সবচেয়ে বেশি ২৪টি গ্র্যান্ড স্লামের রেকর্ড ছোঁয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলা সেরেনা জিতেছেন ৬-২, ৬-১ গেমে। তৃতীয় রাউন্ডের একপেশে এই ম্যাচ হারার পর আবেগে কেঁদেই ফেলেছেন ইয়েস্ত্রমস্কা। তাঁকে কাছে গিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছেন সেরেনা, ‘কেঁদো না। অসাধারণ খেলেছ, তুমি যে এগিয়ে যাবে, সেটা দেখাতে পেরেছ।’

আর সেরেনা দেখিয়েছেন তাঁর সাফল্যক্ষুধা। দুর্দান্ত এই জয়ের পরও কী বিনয়ী তিনি, ‘আমার তো মনে হয়, কেবল শুরু করেছি আমি। (যেখানে যেতে চাই) সেখানে এখনো আমার যাওয়ার বাকি বলেই মনে করি আমি।’ এগিয়ে চলার পথে চতুর্থ রাউন্ডেই বড় একটা বাধা টপকাতে হবে ২৩টি গ্র্যান্ড স্লামের মালিককে। এই রাউন্ডে তিনি মুখোমুখি হবেন সিমোনা হালেপের, যিনি তৃতীয় রাউন্ডে হারিয়েছেন সেরেনারই বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসকে—৬-২, ৬-১ গেমে।

সেরেনার সহজ জয়ের দিনে বাদ পড়ার শঙ্কায় কাঁপতে হয়েছিল নাওমি ওসাকাকে। তাইওয়ানের সি-সু বেইয়ের বিপক্ষে প্রথম সেটে ১-৪-এ পিছিয়ে পড়েছিলেন ইউএস ওপেনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওসাকা। ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই সেটটি ৭-৫ গেমে জিতলেও পরের সেট হেরে বসেন ৪-৬ গেমে। শেষ সেটে অবশ্য সহজেই জিতেছেন—৬-১ গেমে। তো শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর রহস্য কী? ওসাকার উত্তর, ‘আমি হাল ছাড়তে চাইনি।’

বাদ পড়েছেন মারিয়া শারাপোভাও। চতুর্থ রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ান তরুণী অ্যাশলে বার্টের কাছে হেরে বিদায় নেন ২০০৮ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন বিজয়ী। প্রথম সেটে ৬-৪ জিতলেও দ্বিতীয় আর তৃতীয় সেটে দাঁড়াতেই পারেননি শারাপোভা। হেরেছেন ৬-১, ৬-৪ গেমে। আর এই জয়ে ১০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শেষ আটে নিজ দেশের কোনো নারীকে পেল অস্ট্রেলিয়া। বার্টের আরেকটি বিশেষ পরিচয়, তিনি ক্রিকেটার ছিলেন। ২০১৪ সালের ইউ এস ওপেনের পর টেনিস আর ভালো লাগেনি বার্টের। তাই টেনিস ছেড়ে নেমে পড়েন ক্রিকেটে। খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লিগেও। এমনকি বিগ ব্যাশ টি টোয়েন্টি লিগেও খেলছেন বার্ট। ২০১৬ সালে আবার ফিরে আসেন টেনিসে। আর এবার তিনি হারালেন পাঁচ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী সাবেক শীর্ষস্থানীয় শারাপোভাকে।

শেষ আটে ওঠার আগেই ছিটকে পড়ে বিমর্ষ শারাপোভা। ছবি: এএফপি
শেষ আটে ওঠার আগেই ছিটকে পড়ে বিমর্ষ শারাপোভা। ছবি: এএফপি

পুরুষ বিভাগে জয়রথ ছুটছেই নোভাক জোকোভিচের। শেষ ষোলোয় ওঠার পথে কাল সার্বিয়ান তারকা ৬-৩, ৬-৪, ৪-৬, ৬-০ গেমে হারিয়েছেন ১৯ বছরের কানাডিয়ান তরুণ ডেনিস শাপোভালোভকে। জোকোভিচের জন্য এই জয়টা তাৎপর্যপূর্ণ। টুর্নামেন্ট থেকে এখন যদি তিনি বিদায়ও নেন, তবু অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শেষে তাঁর র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ থাকাটা নিশ্চিত হয়েছে এই জয়েই। তবে এই ম্যাচ শেষে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ম্যাচের লাইট নিয়ন্ত্রণ পছন্দ হয়নি টেনিস নাম্বার ওয়ানের। দিনের আলো ৪ ঘণ্টা বাকি থাকার পরও কেন লাইট জ্বালানো হয়েছে সেটি নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন সরাসরি। এটা অপ্রয়োজনীয় ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন।

জোকোভিচ ছাড়াও পুরুষ বিভাগে কাল চতুর্থ রাউন্ড নিশ্চিত করেছেন জাপানের কেই নিশিকোরি, কানাডার মিলোস রাওনিচ, জার্মানির আলেক্সান্দার জভেরভ, ক্রোয়েশিয়ার বোরনা কোরিচ। ইতালির ফাবিও ফনিনি হেরে গেছেন স্পেনের পাবলো কারেনো-বুস্তার কাছে।