জিম্বাবুয়েকে কত রানে আটকাতে হবে বাংলাদেশের?
জিম্বাবুয়েকে কত রানে আটকাতে চায় বাংলাদেশ?
টেস্টের প্রস্তুতিতে এমন প্রশ্নটা নিশ্চয় মাথায় ছিল কোচ স্টিভ রোডসের। দল নির্বাচনের পরও নিশ্চয় ছিল। কিন্তু প্রথম দিনেই সে প্রশ্ন এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এমনটা ভাবা যায়নি। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে শক্ত অবস্থানে জিম্বাবুয়ে। ৫ উইকেট হারালেও স্কোর কার্ডে ২৩৬ রান তোলা হয়ে গেছে তাদের। উইকেটে আছেন রীতিমতো শিকড় গেড়ে বসা পিটার মুর। চাকাভাও শেষ ঘণ্টায় ভালো সঙ্গ দিয়েছেন তাঁকে।
জিম্বাবুয়েকে কত রানে আটকানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশের, এমন প্রশ্ন সরাসরি দলের দিকে ছুটে গেছে। ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন আবু জায়েদ রাহী। ঘরের ছেলে এ প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, এ রকম কোনো কথা হয়নি। তবে দ্বিতীয় দিনের পরিকল্পনা কী, সেটা জানাতে গিয়ে এক প্রকারে লক্ষ্যটা জানিয়েও দিয়েছেন, ‘ওদের একটা উইকেট পড়লেই কিন্তু টেল এন্ডাররা চলে আসবে। আমার মনে হয় আমাদের লক্ষ্য থাকবে আগে এক উইকেট নেওয়া। সেটা হলে ওদের ৩২০–এর মধ্যে আটকে দিতে পারব।’
এ ম্যাচ বাংলাদেশ জয়ের জন্য খেলছে। এ কারণেই মাত্র একজন পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এ কথার উল্টো দিক হলো, উইকেটে প্রচুর স্পিন। এমন উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে বাংলাদেশকেই। প্রতিপক্ষ যদি প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ পেয়ে যায়, সেটা কিন্তু বিপদের কারণ হয়ে যাবে। দলের জয়ের পরিকল্পনা সাজাতে গিয়েও আবু জায়েদ আরও একবার জিম্বাবুয়েকে আটকানোর লক্ষ্যটা জানিয়েছেন, ‘আমরা ঠিক করেছি ৩২০–এর ভেতর অলআউট করলে, এই উইকেট শেষের দিকে গিয়ে কিন্তু টার্ন করে। আমরা যদি আগায়ে থাকতে পারি প্রথম ইনিংসে, তাহলে দ্বিতীয় ইনিংস মনে হয় না ওরা বেশি করতে পারবে।’
লক্ষ্যটা অবাস্তব নয়। বাংলাদেশের উইকেটে প্রথম ইনিংসে ৩১৯ বা এর বেশি করেও হারার রেকর্ড আছে। তাও এক–দুবার নয়, ছয়বার। অর্থাৎ প্রথম ইনিংসে বড় স্কোর গড়লেও স্পিনিং উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে খুব বড় কোনো স্কোর তাড়া করতে হয়নি প্রতিপক্ষকে। অথবা স্পিনিং উইকেট ঝামেলা সৃষ্টি করেনি। এ রেকর্ড যদি বাংলাদেশকে সান্ত্বনা দেয়, তবে পাল্টা শক্তি খুঁজে নিতে পারে জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসের এমন স্কোর (৩১৯ বা এর বেশি) করেও হারার সর্বশেষ ঘটনা ২০১২ সালের। এরপর এমন কিছু অন্তত বাংলাদেশে দেখা যায়নি। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ ছয়টি হারেই পরাজিত দলের নামটি বাংলাদেশ।
তবে, জিম্বাবুয়ে এখনো ৩২০ করতে পারেনি। আগামীকাল সকালে ছোটখাটো এক ধসেই গুটিয়ে যেতে পারে জিম্বাবুয়ে। সে ক্ষেত্রে? এমন হিসাব–নিকাশেও জিম্বাবুয়ে একটু স্বস্তি পাচ্ছে। বাংলাদেশে কোনো অতিথি দল ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ২৪০ পার হয়ে যাওয়ার পর হারেনি। ২০১৪ সালে ঢাকা টেস্টে অক্টোবরের সে টেস্টেও শেষ পর্যন্ত ১০১ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে এরই মাঝে ২৩৬ রান তুলে ফেলেছে। ইতিহাসকে পক্ষে টানতে তো আর মাত্র ৫ রান দরকার তাদের!
জিম্বাবুয়ে অবশ্য এত কমে সন্তুষ্ট হতে চাইবে না। ম্যাচের প্রথম ইনিংস না হোক, নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৭৪ রান করেও তো বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেছে তারা! তাই প্রথম ইনিংসের স্কোর আরও নিরাপদে নিতে চাচ্ছে সফরকারীরা। ৮৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে ভালো অবস্থানে আনা শন উইলিয়ামস জানিয়েছেন, ‘আমরা ৩০০ থেকে ৩৫০ এর মতো স্কোর চাচ্ছি। আমি নিশ্চিত ইনিংস ঘোষণা করার আগেই আমরা অলআউট হব, যদি দ্রুত রান তুলে ৪০০ না করি (তাহলে ইনিংস ঘোষণা হতে পারে)।’
বাংলাদেশ কি জিম্বাবুয়েকে সে সুযোগ দেবে?