এসবই ম্যারাডোনার অভিনয়!
>তিনি এই হাসেন তো এই কাঁদেন। কখনো উত্তেজনায় শিশুদের মতো লম্ফঝম্প করেন, কখনো মেসিদের পারফরম্যান্স প্রত্যাশামতো না হলে ভীষণ বিরক্ত হন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ধূমপানমুক্ত গ্যালারিতে তাঁকে দেখা যায় সিগারেট হাতে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, রাশিয়া বিশ্বকাপে ম্যারাডোনা গ্যালারিতে যা করছেন, সবই তাঁকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র শুটিংয়ের অংশ!
মাশরাফি বিন মুর্তজা প্রায়ই বলেন, ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো বর্ণাঢ্য চরিত্রের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এই পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নেই! বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের ধারণা যে ভুল নয়, সেটি দেখতেই পারছেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। আর্জেন্টিনার ম্যাচ থাকলেই তাঁকে দেখা যাবে ভিআইপি গ্যালারিতে। ম্যাচের যত রং বদলায়, ম্যারাডোনার বিচিত্র রূপের ততই দেখা মেলে।
এবার ম্যারাডোনা শুধু আর্জেন্টিনা কিংবদন্তি নয়, খেলা দেখতে আসছেন ফিফার শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও। শোনা যাচ্ছে, প্রতিটি ম্যাচ দেখতে ফিফা তাঁকে সম্মানী দিচ্ছে প্রায় ১১ লাখ টাকা। আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ দেখতে আসা ছিয়াশির মহানায়ককে দেখা গেল শুরুতেই এক নাইজেরিয়ান নারীর সঙ্গে নাচতে। ম্যাচ চলার সময় তিনি এই হাসেন তো এই কাঁদেন। মেসির গোলের পর দুহাত উঁচিয়ে ঈশ্বরকে ডাকেন। কখনো উত্তেজনায় শিশুদের মতো লম্ফঝম্প করেন, কখনো মেসিদের পারফরম্যান্স প্রত্যাশামতো না হলে ভীষণ বিরক্ত হন। একবার তো ঘুমিয়েও পড়লেন। মার্কো রোহোর গোলের পর আরেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন দুহাতের মধ্যাঙ্গুলি দেখিয়ে। ম্যাচ শেষে দুঃসংবাদ, ম্যারাডোনা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন! স্বস্তির খবর, দ্রুত সুস্থও হয়ে উঠেছেন আর্জেন্টিনা কিংবদন্তি। শুধু এ ম্যাচেই নয়, আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ধূমপানমুক্ত স্টেডিয়ামে ম্যারাডোনাকে দেখা গেল সিগারেট হাতে! তাঁর জীবনের চিত্রনাট্য এমনই, যাঁর পরতে পরতে রোমাঞ্চ, বিতর্ক। এই চিত্রনাট্যে একঘেয়েমির কোনো জায়গা নেই।
ম্যারাডোনার এসব কাণ্ডকীর্তি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম আবার দেখছে অন্য চোখে। তাদের দাবি, আর্জেন্টিনা কিংবদন্তি গ্যালারিতে যা করছেন সবই অভিনয়! ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংলিশদের স্বপ্ন কেড়ে নেওয়ার জ্বলুনি থেকে খোঁচা দিতেই নয়, ডেইলি স্টারের দাবি, আসলেই না কি ম্যারাডোনা এত আবেগ দেখাচ্ছেন অভিনয়ের অংশ হিসেবে। লন্ডনে জন্ম নেওয়া চিত্রপরিচালক আসিফ কাপাডিয়া একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র তৈরি করছেন ম্যারাডোনার ওপর। এই চলচ্চিত্রের অর্থায়ন করছে চ্যানেল ফোর। প্রতিভাধর শিশু ও খ্যাতি—এই বিষয়বস্তুর ওপর আসিফ এর আগে নির্মাণ করেছেন ব্রাজিলিয়ান মোটর রেসিং চ্যাম্পিয়ন সিনা ও ব্রিটিশ গায়িকা অ্যামি ওয়াইনহাউসের ওপর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। তাঁর ট্রিলজির শেষ পর্বটা তৈরি হচ্ছে ম্যারাডোনার ওপর, যেটি মুক্তি পেতে পারে আগামী বছর।
প্রামাণ্যচিত্রের অংশ হিসেবেই নাকি ম্যারাডোনা গ্যালারিতে হাত ছুড়ছেন, হাসছেন, কাঁদছেন, লাফালাফি করছেন, অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করছেন। আর্জেন্টিনা কিংবদন্তির ভক্তরা প্রশ্ন তুলতে পারেন, আর্জেন্টিনাকে নিয়ে ম্যারাডোনার উথলে পড়া আবেগ নতুন নয়। তাঁর আবেগের এই বিস্ফোরণ দেখা যায় প্রতি বিশ্বকাপেই। কিন্তু আগের বিশ্বকাপগুলোয় তো দেখা যায়নি তিনি শুটিং করেছেন! এবার কেন এই প্রসঙ্গ আসছে?