সাম্পাওলি টিকে যাচ্ছেন, কাবায়েরো ছাঁটাই!
আর্জেন্টিনা দল আবেগ থিতিয়ে এনেছে। ঠান্ডা মাথায় পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মেসিরা। সাম্পাওলির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছে এএফএ। তবে কাবায়েরো কি এখনো গোলরক্ষক হিসেবে থেকে যাবেন?
দলে কোন্দল! গুঞ্জন রটেছিল, নাইজেরিয়া ম্যাচের আগেই কোচ বদল চান আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা। সেই দাবি মেনে হোর্হে বুরুচাগাকে নাকি ভারপ্রাপ্ত কোচও বানিয়ে দিতে রাজি ছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা (এএফএ)। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের অন্যতম নায়ক দলের পরিচালকের ভূমিকায় বিশ্বকাপেই আছে। এএফএ এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। সাম্পাওলির প্রতি পূর্ণ আস্থার কথা জানিয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে এতটা কদর হয়তো পাচ্ছেন না উইলি কাবায়েরো। আর্জেন্টিনার ১ নম্বর গোলরক্ষকের জায়গা কাবায়েরো হারাতে চলেছেন বলেই খবর।
এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২৬ জুনের ম্যাচে আর্জেন্টিনার গোলপ্রহরী হিসেবে ফ্রাঙ্কো আরমানিকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা একরকম নিশ্চিত। গত ম্যাচে কাবায়েরোর শিশুতোষ ভুলের পর থেকেই আর্জেন্টিনা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। এর ফলেই ৩-০ গোলের সেই পরাজয়।
আর্জেন্টিনার শীর্ষ দল রিভার প্লেটের গোলরক্ষক হিসেবে বেশ নাম কুড়ালেও আরমানির এখনো আন্তর্জাতিক অভিষেকই হয়নি। কাবায়েরোও এবার বিশ্বকাপে প্রথম আর্জেন্টিনার হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছেন। চেলসির এই রিজার্ভ গোলরক্ষক সম্পর্কে চেলসির সাবেক কোচ হোসে মরিনহো কাল বলেছেন, কাবায়েরোর জায়গায় তিনি থাকলে তিনিও কাবায়েরোর মতো সেভ তো করতে পারতেনই, কিন্তু কাবায়েরোর মতো মারাত্মক ভুলগুলো করতেন না। এর থেকেই বোঝা যায়, কাবায়েরোকে কতটা দাম দেন মরিনহো। আর্জেন্টিনা সংবাদমাধ্যমের আর্তচিৎকারের পরও সাম্পাওলি তাতে কান দেননি। এবার হয়তো কথা শুনবেন বলেই মনে হচ্ছে।
সাম্পাওলি ক্রিস্টিয়ান পাভোনকেও প্রথম একাদশে রাখেননি প্রথম দুই ম্যাচে। এ নিয়েও তীব্র সমালোচনা। গত ম্যাচে একপর্যায়ে একে একে সব খেলোয়াড়কে মাঠে নামিয়ে দিতে শুরু করেছিলেন। যেন খড়কুটো ধরে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা। দিবালা, মেসি, হিগুয়েইন, পাভোন...সবাই তখন মাঠে। সাম্পাওলির বিচিত্র কৌশল নিয়ে আলোচনা যখন হচ্ছিল, এর মধ্যেই খবর রটে, কোচ নিজে সব দায় মেনে নিলেও এমন আভাসও দিয়েছেন, খেলোয়াড়েরা তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। খেলোয়াড়েরা পরিকল্পনা মেনে খেলতে পারলে ফলাফল অন্য রকম হতো। এ ব্যাপারে সার্জিও আগুয়েরোর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার একমাত্র গোলদাতা বলেছেন, সাম্পাওলি যা খুশি বলতে পারেন। আগুয়েরো আর সংবাদমাধ্যমে কথাই বলেননি। একবাক্যেই শেষ!
তখনই গুজব রটে, খেলোয়াড়েরা কেউ সাম্পাওলিকে চাইছেন না। আর্জেন্টিনার দায়িত্বে এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ১৩টি ভিন্ন একাদশ সাজানো আর সব মিলিয়ে ৫৯ জন খেলোয়াড়কে খেলানো সাম্পাওলির বিরুদ্ধে নাকি বিদ্রোহ করছেন মেসি-আগুয়েরোরা। তাঁদের চাওয়া হোর্হে বুরুচাগাকে। তবে এএফএ এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, এসব কিছুই হয়নি। সাম্পাওলির প্রতি খেলোয়াড়দের আস্থা আছে। এএফএরও পূর্ণ আস্থা আছে কোচের ওপর।
সাম্পাওলি আজ সকালে শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলনেও নেমেছেন। গত ম্যাচে আইসল্যান্ড না জেতায় আর্জেন্টিনা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে। আজ অনুশীলনে অনেকটা নির্ভার দেখা গেছে খেলোয়াড়দের। সাম্পাওলি নতুন ছক নিয়ে গবেষণা করছেন, আলোকচিত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তাঁর নোটবুকের আঁকিবুঁকি। আর্জেন্টিনা কোচদের চিরায়ত পাগলামির নতুন উদাহরণ দেখিয়ে সাম্পাওলি আবারও না শেষ ম্যাচে অদ্ভুত কোনো ছক সাজিয়ে বসেন!