আর্জেন্টিনার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ হবে, দাবি ইসরায়েলের
হজম করতে এখনো কষ্ট হচ্ছে ইসরায়েলের। হওয়ারই কথা। অবশ্য আর্জেন্টিনার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার কথাও ভাবছে না দেশটি। সমঝোতার পথ নিয়েছে তারা। আপাতত আলোচনা চলছে ইসরায়েলকে কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেবে আর্জেন্টিনার ফুটবল সংস্থা (এএফএ)। আর্থিক অঙ্কে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিবর্তে এএফএ আরেকটি ম্যাচ খেলে পুষিয়ে দিতে রাজি। এমন তথ্যই দিয়েছে ইসরায়েল। ম্যাচটি বিশ্বকাপের পরে হতে পারে। তবে ভেন্যু কোনটা হবে, এখনো জানানো হয়নি।
আর্জেন্টিনা-ইসরায়েল প্রীতি ম্যাচ বাতিলে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে কমটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দাবি, ম্যাচটির ৪৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, এই ম্যাচ বাবদ আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থাকে ২০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছিল। বিক্রি হয়ে গিয়েছিল টিভি স্বত্ব। এখন সবাইকে টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। এএফএ অবশ্য এখনো টাকা ফেরত দেয়নি। ইসরায়েল শুধু ফেরত টাকা নয়, সঙ্গে ক্ষতিপূরণও চায় বলে এর আগে খবর এসেছিল।
এর আগে এমন খবরও এসেছিল, ইসরায়েল ফিফার কাছে নালিশ করবে। ফিফার কাছে তাদের নালিশ ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে। ফিলিস্তিনের হুমকির কারণেই ম্যাচটি হয়নি বলে মনে করে ইসরায়েল। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও নালিশ আছে তাদের। আর্জেন্টিনা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ইসরায়েলকে অবমাননা করেছে বলে মনে করে দেশটি।
তবে এখন তারা সমঝোতার পথেই হাঁটছে। বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ হবে বলে আশাবাদী কমটেক। এ বিষয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে ফক্স স্পোর্টসকে বলা হয়েছে, ‘প্রীতি ম্যাচটির ক্ষতিপূরণ নিয়ে আর্জেন্টিনার তরফ থেকে যে প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বে ছিল, সেই তুর্নাসের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এটি পরিষ্কার, ক্ষতিপূরণের চেয়ে বিশ্বকাপের পর ইসরায়েলে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে বেশি আগ্রহী আর্জেন্টিনা।’
কমটেকের প্রধান নির্বাহী ড্যানি বেন নায়েম আরও বলেন, ‘এই কদিন আর্জেন্টিনা দলের ওপর যে পরিমাণ চাপ গেছে, সে জন্য আমি খুবই দুঃখিত। ইসরায়েলে না এলেও তাদের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানাই। আমরা একসঙ্গে নতুন একটি ম্যাচ আয়োজন করার কথা ভাবছি। আর্জেন্টিনার জন্য শুভকামনা রইল। আশা করছি, ওরা বিশ্বকাপে অনেক সফলতা নিয়েই দেশে ফিরবে।’
আজকেই জেরুজালেমে ইসরায়েলের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল আর্জেন্টিনার। বিশ্বকাপের আগে তাদের শেষ প্রীতি ম্যাচ। কিন্তু ফিলিস্তিনের ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও আহ্বানে সাড়া দিয়ে ম্যাচটি বাতিল করে আর্জেন্টিনা। যদিও ম্যাচটির আসলেই রাজনৈতিকীকরণ হয়ে গিয়েছিল। এটি হওয়ার কথা ছিল ভিন্ন শহর হাইফায়। ইসরায়েলই ম্যাচটি জেরুজালেমে নিয়ে আসে, যে শহর নিয়ে ফিলিস্তিনের সঙ্গে রক্তাক্ত বিরোধ চলছেই।
আর্জেন্টিনার ম্যাচ বাতিলকে ইসরায়েল অপমান হিসেবেই নিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপ্রধানকে ফোন করে হস্তক্ষেপ করতে বলেছিলেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীও এ নিয়ে ঝাঁজালো কথা বলেছেন। বোঝাই যায়, কোন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল বিষয়টি। ইসরায়েল এখন বিকল্প হিসেবে আর্জেন্টিনাকে আবার নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তবে ম্যাচটি জেরুজালেমেই হবে কি না, তা এখনো দেশটির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়নি।