লুকিয়ে বিমানবন্দর ছাড়লেন সাকিবরা
>বাংলাদেশ দল দেরাদুন থেকে দেশে ফিরেছে আজ বিকেলে। বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চাননি দলের কেউই। রীতিমতো লুকিয়েই বিমানবন্দর ছেড়েছেন দলের বেশির ভাগ সদস্য
‘সবার আগে চলে গেছেন সাকিব!’—কোন খেলোয়াড় কখন, কীভাবে লুকিয়ে বিমানবন্দর ছেড়েছেন, ভিআইপি গেটে দাঁড়িয়ে সেটিই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন আনসার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। যে উড়ানে বাংলাদেশ দেরাদুন থেকে দিল্লি হয়ে ঢাকায় পা রেখেছে, সেটি পৌঁছেছে বিকেল চারটার দিকে। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা কোনোভাবে শেষ করে বেশির ভাগ খেলোয়াড় বিমানবন্দর ছেড়েছেন সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে।
বিদেশ থেকে ফেরার পর সব সময়ই যে খেলোয়াড়েরা সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন, তা নয়। দেশের বাইরে বাংলাদেশ এবারই যে প্রথম খারাপ খেলল, সেটিও নয়। তবে আজ যেভাবে সাকিবরা লুকিয়ে বাঁচলেন, কত দিন পর এই দৃশ্যটা দেখা গেল, সেটি তাঁরাও বলতে পারবেন না। বাংলাদেশ ভালো খেললে তো কথাই নেই, মোটামুটি পারফরম্যান্সের পরও বিমানবন্দরে বিসিবি কর্তাদের ভিড় লেগে যায়। গত মার্চে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল হারের পরও ফুলেল অভ্যর্থনা পেয়েছেন খেলোয়াড়েরা। এমনকি মোস্তাফিজুর রহমান যেবার আইপিএলে ভালো খেলে ফিরলেন, নেত্রকোনার বিখ্যাত ‘বালিশ’ মিষ্টি নিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়।
ভালো খেললে খেলোয়াড়দের অভ্যর্থনা জানানোর লোকের অভাব হয় না। খারাপ খেললে বিমানবন্দরে সাংবাদিক আর বিসিবির লজিস্টিক বিভাগের দু-একজন ছাড়া কাউকে দেখা যায় না। আজও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি। দেরাদুন থেকে ঢাকার ভ্রমণক্লান্তি তো ছিলই, খেলোয়াড়দের বিষণ্ন মুখগুলোতে স্পষ্ট দেখা গেল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ধবলধোলাইয়ে লজ্জা আর অপমানের দাগ। সাকিব আল হাসান চোখের পলকে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমদুউল্লাহদের দেখাই মিলল না। কালো কাচের আড়াল হলেন কোর্টনি ওয়ালশসহ কোচিং স্টাফের দুজন সদস্য। বিকেলের সোনালি রোদ্দুরেও সৌম্য সরকার, লিটন দাস, আবু হায়দার, আবুল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজদের মুখে দেখা গেল রাজ্যের আঁধার!
খেলোয়াড়েরা যে সংবাদকর্মীদের সামনে আসবেন না, আগে থেকেই তা অনুমান করা যাচ্ছিল। কঠিন সময়ে বেশির ভাগ সময়েই দলের প্রতিনিধি হিসেবে যিনি মিডিয়া সামলান, সেই ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ পর্যন্ত আজ লুকিয়ে বাঁচলেন! বাংলাদেশ দল এই মুহূর্তে এতটাই নির্বাক, কারও যেন কিছু বলার নেই। ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সবাই! আফগানিস্তানের কাছে ধবলধোলাইয়ের পর আর কীই–বা বলার থাকে! বিমানবন্দর থেকে নাহয় লুকিয়ে বাঁচা গেল। কিন্তু পরিসংখ্যান-রেকর্ড থেকে কি সহজে মুক্তি মিলবে? আফগানদের কাছে ধবলধোলাই—এই তিক্ত স্মৃতি অবশ্যই বহুদিন তাড়া করে ফিরবে বাংলাদেশকে।