সাকিবের 'ইংলিশ' কোচই হচ্ছেন বাংলাদেশের কান্ডারি!
>বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হওয়ার ব্যাপারে বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে স্টিভ রোডসের নাম। কে এই রোডস? দেখে নেওয়া যাক!
গত অক্টোবরে বাংলাদেশের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এরপর স্থায়ী কোচ হিসেবে কাউকেই নিয়োগ দেয়নি বিসিবি। আপাতত ভারপ্রাপ্ত কোচ হিসেবে দলের দায়িত্বে আছেন বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। আট মাস ধরে খোঁজাখুঁজি করার পর অবশেষে ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডসকে মনে ধরেছে বিসিবির। শিগগিরই বাংলাদেশের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি। এখনো অবশ্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে বড় কোনো ঝামেলা না হলে আগামী মাসেই বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে উড়াল দেবেন এই কোচ।
বিসিবি এবার কোচ খুঁজতে ঘেমেনেয়ে শেষ। ফিল সিমন্স, মাহেলা জয়াবর্ধনে, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, পল ফারব্রেস, টম মুডি, কুমার সাঙ্গাকারা, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, রিচার্ড পাইবাস, জিওফ মার্শ...কত কত নামই না শোনা গেল। কিন্তু কিছুতেই কিছু মিলছিল না। অবশেষে গ্যারি কারস্টেন এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দিলেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাঁর পরামর্শেই রোডসকে কোচ বানাতে আগ্রহী বিসিবি। তাঁর যা প্রোফাইল, তাতে বেশ ভালো এক কোচকেই পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করে আনায় অনেক সুনাম রোডসের।
মাঝারি মানের দলকে সাফল্য এনে দেওয়াতেও সুখ্যাতি আছে। যদিও আন্তর্জাতিক কোনো দলে কাজ করেননি। সব অভিজ্ঞতা ইংলিশ কাউন্টি ঘিরে। আর এটা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ কাজেও আসতে পারে। ২০১৯ বিশ্বকাপ তো ইংল্যান্ডেই।
উইকেটরক্ষক বাবা বিলি রোডসের সন্তান স্টিভ রোডস খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন উইকেটরক্ষক। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ১১ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। তবে তাঁর আসল পরিচয় তিনি ইংলিশ কাউন্টি দল উস্টারশায়ার কিংবদন্তি খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে। ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা ২০ বছর তাঁদের হয়ে খেলা রোডস খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে ২০০৬ সালে কোচ হিসেবে টম মুডির স্থলাভিষিক্ত হন। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত একই সঙ্গে উস্টারশায়ার কোচ ও ডিরেক্টরের দ্বৈত ভূমিকা পালন করেছেন।
সামনের সপ্তাহে ৫৪তে পড়তে চলা এই কোচ ২০১৭ সালে উস্টারশায়ারেক কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ডিভিশন ওয়ানে উন্নীত করেছেন। ২০১১ মৌসুমে এই উস্টারশায়ার হয়েই কাউন্টি খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান, তখন যথারীতি সাকিবদের কোচের দায়িত্বে রোডসই ছিলেন। উস্টারশায়ারে সাকিব দুই মৌসুমে ২৬টি ম্যাচ খেলেছেন। ফলে রোডসের কোচিংয়ের ধরন বেশ ভালোমতোই জানার কথা সাকিবের।
উস্টারশায়ার ছাড়াও ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ ছিলেন রোডস। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে স্কাউট হিসেবেও কাজে লাগিয়েছিল। উঠতি প্রতিভা খুঁজে আনার জহুরি চোখ আছে রোডসের। পুরো ক্যারিয়ারে শুধু একটাই দাগ। উস্টারশায়ারের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কটা শেষ হয়েছিল বড় তিক্তভাবে। তরুণ ক্রিকেটার অ্যালেক্স হপবার্নের ধর্ষণ মামলার কথা দীর্ঘ সময় ক্লাব কর্তৃপক্ষকে না জানানোয় বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। তবে তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করা ও গড়ে তোলার ব্যাপারে রোডসের সুনামে সেটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।