নেপালের লামিচানের ইতিহাসকে আড়ালে ফেলে দিলেন কোহলি-ডি ভিলিয়ার্স
>
- আইপিএল অভিষেকেই উইকেট নেপালের লামিচানের (২৫/১)
- ১৮১ তাড়া করে ১ ওভার হাতে রেখে ম্যাচ জিতেছে বেঙ্গালুরু
একাদশ ঘোষণার পরই জানা গেছে, আজ ইতিহাস করে ফেলেছেন সন্দীপ লামিচানে। নেপালের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে খেলতে নেমেছেন এই লেগ স্পিনার। নিজের দশম বলে পার্থিব প্যাটেলকে এলবিডব্লু করে পেয়ে গেছেন প্রথম উইকেটও। কিন্তু ম্যাচ শেষে এমন ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোও গুরুত্ব হারিয়েছে। বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ এক ইনিংসই সেটা নিশ্চিত করেছে। কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সে ভর করে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম দল হিসেবে প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল দিল্লি।
প্যাটেলকে যখন ফেরালেন লামিচানে, বেঙ্গালুরু তখন মহা বিপদে। ১৮১ তাড়া করতে নেমে ১৬ বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলেছে দল। কিন্তু কোহলিকে দেখে সেটা বোঝার উপায় ছিল না। অনায়াস সব কবজির মোচড়ে প্রায় অবলীলায় বল সীমানাছাড়া করছিলেন। অন্যপ্রান্তে এবি ডি ভিলিয়ার্স থিতু হতে একটু সময় নিয়েছেন। এতে দলের কোনো ক্ষতি হয়নি। কোহলি যে ছিলেন খুনে মেজাজে। এক বিন্দু ঝুঁকি না নিয়েও কীভাবে দ্রুত রান তোলা যায়, সেটাই দেখাচ্ছিলেন কোহলি। এর মাঝে এক দর্শক মাঠে নেমে এসেছিলেন কোহলিকে ছুঁয়ে দেখতে, এভাবে খেলছিলেন তাতে অমন ইচ্ছে জাগা অস্বাভাবিক নয়!
মাত্র ২৬ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ফিফটি ছুঁয়ে ফেললেন কোহলি, ডি ভিলিয়ার্সের রান তখনো মাত্র ২০। ১৪ বলে ২ চার ও ১ ছক্কা। পরের ১৪ বলে ২ চারের সঙ্গে ৩টি ছয়, রান এল ৩১টি। ফল, ২৮ বলেই ফিফটি পেয়ে গেলেন ডি ভিলিয়ার্স। এ সময়ে কোহলি ১২ বলে নিয়েছেন ১৬ রান। ডি ভিলিয়ার্সের ফিফটির রান তোলার গতি বাড়াতে চেয়েছিলেন। অমিত মিশ্রর প্রথম বলে কবজির দারুণ ব্যবহারে লং অন দিয়ে চার মারার পরের বলেই আউট হয়ে গেলেন কোহলি। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৪০ বলে ৭০ করে কোহলি যখন ফিরছেন, দল তখন জয় থেকে ৪৬ রান দূরত্বে। কিন্তু হাতে ৪০ বল থাকায় বেঙ্গালুরুর ডাগআউট ছিল নিশ্চিন্তে। ডি ভিলিয়ার্স তো আছেন!
১৫ রানের ব্যবধানে মন্দীপ সিং (১৩) ও সরফরাজ খান (১১) ফিরে গেলে কিছুটা চাপ সৃষ্টি হয়। কোহলি আউট হওয়ার পর ১৮তম ওভার পর্যন্ত মাত্র ৬ রান করেছেন ডি ভিলিয়ার্স, এটাও ভূমিকা রেখেছে চাপ সৃষ্টিতে। ১৯তম ওভারে সে দায় মেটালেন ডি ভিলিয়ার্স। অফসাইডের ওয়াইডের বল টেনে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারলেন ট্রেন্ট বোল্টকে। সেই ওভারের শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দিয়ে অপরাজিত থাকলেন ৭২ রান করে। ৩৭ বলের ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ৬ ছক্কা।
এর আগে ঋষভ পন্তের দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও দেড় শর কাছাকাছি থেমে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল দিল্লি। আগের ম্যাচেই ১২৮ করা পন্ত আজ ৩৪ বলে করেছিলেন ৬১ রান। কিন্তু টপ অর্ডারের অন্যদের ব্যর্থতায় ১৫ ওভারে মাত্র ১২০ রান তুলেছিল দিল্লি। ১৬তম ওভারে ব্যাট করতে নামা অভিষেক শর্মা খেলার ধারা পাল্টে দিয়েছিলেন। মাত্র ১৯ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন শর্মা। এতেই শেষে ৫ ওভারে ৬১ রান তুলেছিল দিল্লি। কিন্তু দলের বিদায় আটকাতে পারেননি পন্ত-শর্মা। কোহলি আর ডি ভিলিয়ার্সের যে দিল্লির ভাগ্য বরণ করার ইচ্ছে ছিল না!