প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, সিলেটের তারাপুর চা-বাগানের পশ্চিম-উত্তর দিকের রাবারবাগানের টিলায় এই পদ্ধতিতে ভূমি দখলের স্পষ্ট আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন টিলার ঢালে ও চূড়ায় টিনের ঘর তোলা হয়েছে। এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যাওয়া–আসার জন্য টিলার ঢাল কেটে রাস্তা করা হয়েছে। এসব ঘরের বাসিন্দারা ধীরে ধীরে টিলা কেটে সাবাড় করেন বলে এসব ঘর ‘টিলাখেকো’ হিসেবে পরিচিত। যাঁরা এসব ‘টিলাখেকো’ তুলছেন, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে সামনে আসছেন না। তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে ঘর তুলে সেই ঘর ভাড়া দিচ্ছেন। এভাবে টিলা দখলের ঘটনা নতুন নয়।
এর আগে বহুবার বহু টিলা এই তরিকায় দখল করা হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে প্রথম আলোর সরেজমিন অনুসন্ধানে একই এলাকায় ‘টিলাখেকো’ ঘরের সন্ধান মিলেছিল। সে সময় প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরিবেশ অধিদপ্তর একটি প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ডও করেছিল। এক বছর বিরতি দিয়ে আবার একটি চক্র টিলাখেকো ঘর তৈরি করা শুরু করেছে। এর পেছনে যে চা-ভূমি দখলের কৌশল রয়েছে, তা নিয়ে স্থানীয় কারও মনে কোনো সন্দেহ নেই।
টিলার ওপর ঘর তোলা এবং টিলার ঢাল কেটে রাস্তা করা হলে আস্তে আস্তে টিলার প্রাকৃতিক আদল পরিবর্তিত হয়। এর ক্ষতিকর কিছু প্রভাব সরাসরি চোখে পড়ে। কিছু প্রভাব থাকে পরোক্ষ। পরিবেশবিদেরা ছাড়া সাধারণ মানুষ এসব ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারেন না। এ কারণে এ বিষয়ে পরিবেশবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মীদের এগিয়ে আসা দরকার। আর সরকারের পক্ষ থেকে ‘উত্তরের প্রাকৃতিক ঢাল’খ্যাত এই টিলাগুলো রক্ষা করতে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। দ্রুত অভিযান চালিয়ে এসব ঘর অপসারণ করা জরুরি।
পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকেও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্টকারী দখলবাজদের বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে সোচ্চার হতে হবে।