নিজ দেশে ফিরে যাও: ৪ নারী কংগ্রেস সদস্যকে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রমাণ করেছেন যে তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন বর্ণবাদী। গতকাল রোববার একাধিক টুইটে তিনি প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই চারজন কংগ্রেস সদস্য হলেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-করতেস, রাশিদা তালিব, আইয়ানা প্রেসলি ও ইলহান ওমর। এঁদের মধ্যে প্রথম তিনজনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে, একমাত্র ওমরই সোমালিয়া থেকে এসেছেন।
ট্রাম্প টুইটবার্তায় লেখেন, ‘এরা এমন সব দেশ থেকে এসেছে, যাদের সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কীভাবে পরিচালনা করতে হবে, সে পরামর্শ দেওয়ার বদলে তাদের উচিত হবে যার যার দেশে ফিরে যাওয়া। সেখানে অবস্থা বদলানোর পর তারা ফিরে এসে বলুক, কীভাবে আমাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্ব তীব্র ভাষায় ট্রাম্পের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য প্রবল রকম বর্ণবাদী, তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য আমেরিকাকে বিভক্ত করা। তিনি বলেন, ‘এই কথা থেকেই বোঝা যায়, ট্রাম্পের উদ্দেশ্যই ছিল আমেরিকাকে শ্বেতকায় করা, মহান করা নয়। কিন্তু আমেরিকার আসল শক্তি তার বহুজাতিকতা, তার বর্ণবৈচিত্র্য।’
গতকাল সকালে ট্রাম্প এই টুইট করেন। এদিন থেকে আমেরিকার ১০টি শহরে বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের উদ্দেশে ব্যাপক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যে চারজন নারী কংগ্রেস সদস্য ট্রাম্পের কটাক্ষের লক্ষ্য, তাঁরা সবাই তীব্র ভাষায় সে বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন।
আইয়ানা প্রেসলি এক পাল্টা টুইটে লেখেন, ‘ট্রাম্পের কথায় বিস্মিত হওয়ার মতো কিছুই নেই। তাঁর লক্ষ্যই হলো অভিবাসীদের মানবেতর প্রমাণ করা এবং তাদের পরিবারকে নিষ্ঠুরভাবে বিভক্ত করা।’
ইলহান ওমর লেখেন, ‘কংগ্রেস সদস্য হিসেবে আমরা সবাই আমেরিকাকে রক্ষা করার শপথ নিয়েছি।’
ওকাসিয়া-করতেস লেখেন, ‘আপনি ক্রুদ্ধ, কারণ আপনি এ কথা বুঝতে অক্ষম যে আমেরিকা এমন এক দেশ, আমরাও যার অন্তর্ভুক্ত।’
সাম্প্রতিক সময়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর নীতিগত প্রশ্নে এই চারজন প্রগতিশীল নারী সদস্যের সঙ্গে পেলোসি ও দলীয় নেতৃত্বের বড় রকমের মতভেদ দেখা দিয়েছিল। ট্রাম্পের টুইটের ফলে তাঁরা পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সে মনোভাব প্রকাশ করে মিশিগান থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ডেবি ডিঙ্গেল মন্তব্য করেন, ‘দলকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করা যায়, আমি সে ব্যাপারে চিন্তিত ছিলাম। ট্রাম্পই আমাদের সে সুযোগ করে দিলেন। আমাদের দলের কেউ এই জাতীয় ঘৃণা সহ্য করবে না।’ আরও প্রায় ৯০ জন ডেমোক্রেটিক সদস্য ট্রাম্পের বক্তব্যকে বর্ণবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কোনো রিপাবলিকান সদস্য এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের কথার সমালোচনা করেননি। শুধু ট্রাম্পের নীতির প্রতিবাদে গত সপ্তাহে রিপাবলিকান পার্টি থেকে পদত্যাগ করা জাস্টিন আমাস এই বক্তব্যকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।