মসজিদে হামলা নিয়ে প্রথম টুইট মুছে ফেলেন ট্রাম্প
টুইটারে বরাবরই সরব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার ঘটনায় তাঁর টুইট সেভাবে সরব নয়। গতকাল শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার পর তা নিয়ে টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই টুইটে তাঁর নিজের একটি শব্দও ছিল না। হামলা নিয়ে কোনো নিন্দা বা হতাহত ব্যক্তিদের জন্য কোনো সমবেদনা ছিল না। শুধু ডানপন্থী একটি নিউজ সাইটের এ–সংক্রান্ত খবরের লিংক পোস্ট করেছিলেন তিনি। পরে তিনি ওই টুইট মুছে দিয়ে নতুন আরেকটি টুইট করেন।
গতকাল ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেনটন হ্যারিসন টারান্ট নামের এক অস্ট্রেলীয় যুবক। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। দুই মসজিদে হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। এর মধ্যে আল নুর মসজিদে ৪১ জন এবং লিনউড মসজিদে সাতজন নিহত হন। একজন হাসপাতালে মারা যান। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০ জন।
আজ শনিবার নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, হামলা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে প্রথম টুইটটি করেন। সেই টুইটে সমবেদনা প্রকাশ ছিল না, কোনো শব্দই ছিল না। আমেরিকার ডানপন্থী নিউজ সাইট ব্রেইটবার্ট নিউজের একটি খবরের লিংক পোস্ট করেন তিনি। এপির তথ্য নিয়ে হামলার খবরটি তৈরি করে ব্রেইটবার্ট নিউজ। খবরটির নিচে পাঠক মন্তব্য ছিল খুবই অশালীন, ব্যঙ্গাত্মক ও কুরুচিপূর্ণ।
এখনো ওই সাইটের অনেক মন্তব্য নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বা মুছে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও অনেক প্রশ্নবিদ্ধ মন্তব্য সেখানে রয়ে গেছে। হামলাকারী ব্রেনটনের হামলার ভিডিওটি মুছে দেওয়ার কারণে ফেসবুককে অনেকে ‘ফ্লেইকবুক’ বলেও মন্তব্য করেছে।
ব্রেইটবার্টের নিয়মিত পাঠক হিসেবে ওই সাইটের পাঠকের মনোভাব সম্পর্কে ভালোই জানা আছে ট্রাম্পের।
টুইটটি পরে মুছে দেন ট্রাম্প। ১০ ঘণ্টা পর তিনি আরেক টুইটে হামলার নিন্দা জানান এবং নিউজিল্যান্ডের পাশে থাকার কথা জানান।
এদিকে ক্রাইস্টচার্চ হামলার ঘটনায় শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ থেকে বিশ্বব্যাপী হুমকি বৃদ্ধির ঘটনার প্রতিফলন ঘটেছে কি না, তা জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প জানান, তিনি তা মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই তা মনে করি না। আমি মনে করি, গুরুতর সমস্যা রয়েছে—এমন একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী এরা (হামলাকারীরা)।’
তবে হামলাকারী মুসলিম হলে তিনি মানসিক অসুস্থতার অজুহাত তুলে বিষয়টি এমন হালকাভাবে নিতেন কি না, তা কল্পনা করাও মুশকিল বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।