নিউইয়র্কে প্রবাসী শিল্পীদের পরিবেশনায় 'চিত্রাঙ্গদা'
রবীন্দ্রনাথ কাব্যনাট্য হিসেবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ লিখে শেষ করেন ১২৬ বছর আগে, ১৮৯২ সালে। এর ৪৪ বছর পর ১৯৩৬ সালে সেই কাব্যনাট্যকে রূপান্তরিত করেন নৃত্যনাট্যে। মহাভারতের কাহিনির ভিত্তিতে রচিত এই নৃত্যনাট্যের আখ্যান ভাব একদিকে যেমন প্রথাগত, তেমনি এর বাণী সম্পূর্ণ আধুনিক। ‘নারীকে চিনতে হবে তার স্বরূপে, তার আত্মশক্তিতে, শুধু বহির্গত সৌন্দর্যে নয়’—নাটকের এই বাণী নারী স্বাধীনতার প্রবক্তাদের এখনো প্রবলভাবে আন্দোলিত করে।
গতকাল শনিবার শুধু প্রবাসের অপেশাদারি শিল্পীদের নিয়ে সেই নৃত্যনাট্যের সফল মঞ্চায়ন করল নিউইয়র্কের বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা) কুইন্স থিয়েটার মঞ্চে। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা কেবল অপেশাদারি নন, সবাই বেড়ে উঠেছেন প্রবাসে, এই প্রজন্মের। অধিকাংশই হয় স্কুলে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। নাট্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন নৃত্যগুরু অনুপ কুমার দাশ। এটি বাফার উদ্যোগে ও ব্যবস্থাপনায় রবীন্দ্রনাথের তৃতীয় নৃত্যনাট্য।
কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্র, চিত্রাঙ্গদা ও অর্জুনের চরিত্রে ছিল যথাক্রমে মার্জিয়া স্মৃতি ও অন্তরা সাহা। চিত্রাঙ্গদার চরিত্রে ছিল ঈশানী চৌধুরী। তাঁদের সঙ্গে সখী অথবা শিকারির দলের সদস্য হিসেবে যোগ দেয় নানা বয়সের এক দল ছেলেমেয়ে। হলঘরটি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
নাট্য পরিচালক অনুপ কুমার দাশ দর্শকদের ধন্যবাদ দিয়ে জানান, এটি ছিল তাঁর সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী নাট্য প্রয়াস। এর জন্য দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই নাটকের সফল মঞ্চায়নের জন্য তিনি আসল কৃতিত্ব দেন নতুন প্রজন্মের এই সব ছেলেমেয়ে ও তাঁদের মা-বাবাকে, যাঁরা দিনের পর দিন মহড়ায় এসে সঙ্গ দিয়েছেন। এই সাফল্যের ‘আসল নায়ক’ প্রবাসের এই সব নবীন শিল্পী ও মা–বাবা।
একই কথা বলেন বাফার সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি আশ্বাস দেন, প্রবাসের দর্শকেরা যদি এইভাবে তাঁদের সমর্থন অব্যাহত রাখেন, তাহলে বাফা কবিগুরুর আরও অনেক নাট্যকর্মই উপহার দিতে উৎসাহী হবে।