নিউইয়র্কে কম খরচে আবাসনের দাবিতে আন্দোলন প্রস্তুতি

স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য নিউইয়র্ক দিন দিন ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। বিশেষত আবাসন ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এই অবস্থায় নিউইয়র্কে বাসা ভাড়ার হার পুনর্গঠন নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে।
আবাসন খাতে ভাড়ার নীতিমালা সংশোধনের আন্দোলন তৈরিতে মূল সংগঠকের ভূমিকা পালন করছে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং নামের একটি সংগঠন। এর সঙ্গে রয়েছে লিগ্যাল এইড সোসাইটি, ভোকাল নিউইয়র্ক, এএআরপি, দ্য কোয়ালিশন ফর দ্য হোমলেস ও নিউইয়র্ক হাউজিং কনফারেন্স। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাফোর্ডেবল হাউজিংয়ে কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাড়িভাড়া সম্পর্কিত বিদ্যমান নীতিমালার মেয়াদ ২০১৯ সালের জুনে শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে ভাড়াটেদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রস্তাব করতে হবে।


নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যমান নীতিমালায় কোনো বাড়ির মালিক চাইলে কিছু সংস্কারের মাধ্যমে নিজের ভবনকে বিলাসবহুল ঘোষণা করে সব বাধ্যবাধকতা এড়াতে পারেন। এর ফলে রাতারাতি বাড়িভাড়ার নীতিমালাকে পাশ কাটিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া আড়াই হাজার ডলারের বেশি করে ফেলা হচ্ছে। নীতিমালায় থাকা এই সুযোগ তুলে দিয়ে ভাড়াটেবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবি উঠেছে বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে। একই সঙ্গে নগরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও ভবন সংস্কারের দোহাই দিয়ে ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন করার যে সুযোগ বাড়ির মালিকদের জন্য রাখা হয়েছে, তাও তুলে দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।

এই সব দাবি সংবলিত একটি চিঠি এরই মধ্যে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর কাছে পাঠানো হয়েছে। একই চিঠি পাঠানো হয়েছে অঙ্গরাজ্যের আইনসভার স্পিকার কার্ল হেস্টি ও সিনেটর আন্দ্রে স্টুয়ার্ট-কাজিনসের কাছেও।

এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আবাসনসহ নানান নাগরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে আমরা কাজ করছি আমরা। এর সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে। এর আগে এই সংগঠনগুলো কখনোই একটি ইস্যুতে এক জোট হয়নি। এবারই প্রথম আমাদের নগর ও এর আশপাশের অঞ্চলে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের মানুষদের আবাসন সংকট নিয়ে এতগুলো সংগঠন এক জোট হয়েছে। কারণ নিউইয়র্কে বিদ্যমান বাড়িভাড়া নীতিমালা এবং এতে থাকা বিভিন্ন ফাঁকফোকর ব্যবহার করে বাড়ির মালিকেরা অন্যায্য আচরণ করছে। ফলে বহু ভাড়াটেকে রীতিমতো উদ্বাস্তু হয়ে পড়তে হচ্ছে। এরই ফল হচ্ছে নিউইয়র্ক নগরে গৃহহীন মানুষের সংখ্যার উল্লম্ফন। এই নীতিমালায় বিদ্যমান সংকটের কারণে শুধু ভাড়াটে নন, অনেক বাড়ির মালিকও বিপাকে পড়ছেন। সবকিছু মিলিয়ে এই নীতিমালায় বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন।’

গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর মুখপাত্র রিচার্ড অ্যাজোপার্ডি বাড়িভাড়া-বিষয়ক দাবি সম্পর্কে বলেন, ‘গভর্নর তাঁর পুরো রাজনৈতিক জীবন কাটিয়েছেন একটি তুলনামূলক ন্যায়ানুগ আবাসন খাত সৃষ্টির জন্য। আগামী বছর আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে কিছু করার চেষ্টা থাকবে।’