ভালোবাসার অণুগল্প গল্প ২

>

‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে হিরো আয়োজন করেছিল হিরো ভালোবাসার অণুগল্প। সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো। তিনটি গল্প শুরু করে দিয়েছিলাম আমরা আর শেষ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা। আপনাদের কাছ থেকে আমরা হাজারেরও বেশি অসাধারণ কিছু গল্প পেয়েছি। এই গল্পগুলো থেকে সেরা তিনটি বেছে নিয়েছেন আনিসুল হক।’

ভরপেটে ভাত খেয়ে একটা ঘুম দেব ভাবছিলাম, এমন সময় ডোরবেল বেজে উঠল।
একরাশ বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলতেই একটি মেয়ে মিষ্টি গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘ভাইয়া, সাদিয়া কি বাসায় আছে?’
আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোন সাদিয়া?...’
‘আমার বান্ধবী সাদিয়া। আমরা একসাথে পড়াশোনা করি।’
সাদিয়া নামের কাউকে আমি চিনি না, তবে এমন একটা ভঙ্গি করলাম, যাতে মনে হয় সাদিয়াকে আমি খুব ভালো করেই চিনি।
—‘ইডেন কলেজের সাদিয়া?’
—‘নাহ ভাইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।’
—‘ওহ হ্যাঁ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।’
—‘চলুন আপনাকে নিয়ে যাই।’
মেয়েটা আমাকে অনুসরণ করতে শুরু করল। আমাদের ওপরের ফ্ল্যাটেই আক্কাস আংকেল থাকেন। তাঁর মেয়ের নামই সম্ভবত সাদিয়া। যদিও কখনো জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
কলবেল চাপতেই আক্কাস আংকেলের মেয়ে এসে দরজা খুলে দিল...
সে সাদিয়া না। সাদিয়া হলে নিশ্চয়ই দরজা খুলেই বান্ধবীর নাম ধরে ডেকে বলত, ‘তুই?’
—‘ভাইয়া কিছু বলবেন?’
—‘না, ভুলবশত কলবেল চেপেছি।’
আক্কাস আংকেলের পাশের ফ্ল্যাটে থাকে শিহাবরা। শিহাবের দুই বোনের মধ্যে একজন নিশ্চয়ই সাদিয়া। দরজায় ধাক্কা দিতেই শিহাব এসে দরজা খুলল।
—‘শিহাব, তোমার সাদিয়া আপু কি বাসায় আছে?’
—‘সামিয়া আপুর কথা বলছেন?’
—‘তোমার এক আপুর নাম সাদিয়া না?’
—‘না তো। সামিয়া আর সুফিয়া।’
—‘ও আচ্ছা।’
ঈশা বিরক্ত মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললাম, ভেবেছিলাম এটাই।
—‘আপনি কি সত্যি সাদিয়াকে চেনেন?’
—‘চিনব না কেন? চলুন...’
একে একে সব ফ্ল্যাটে গিয়েও সাদিয়া নামের কাউকে পাওয়া গেল না। মেয়েটা একই সাথে রাগত এবং বিরক্ত। আমি মৃদু হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনার নামটা যেন কী?’
—‘নাম জানা কি খুব জরুরি?’
—‘কী যেন? সালমা? না না বিলকিস...’
—‘আমার নাম সালমাও না, বিলকিসও না, আমি ঈশা।’
—‘ও হ্যাঁ, ঈশা।’
ঈশা মোবাইল ফোন বের করে ফোন করল। মনে হচ্ছে সাদিয়ার নম্বর বন্ধ।
—‘আপনি সাদিয়াকে চেনেন না। কেন মিথ্যা বলছেন?’
—‘চিনিতো, রাগ করছেন কেন? চলুন এক কাপ চা খাই, তারপর সাদিয়াদের বাসায় নিয়ে যাব।’
—‘আপনি একাই খান।’
পাশের বাড়িতে খোঁজ করতেই সাদিয়াকে পাওয়া গেল। ঈশা মিষ্টি হেসে বলল, ‘ধন্যবাদ’।
ঘণ্টা দুয়েক পর ঈশা বের হয়ে এল। আমাকে দেখেই ভুরু কুঁচকে বলল, ‘আপনি?’
—‘হ্যাঁ আমি। আপনার একটা কাগজ পড়ে ছিল। সেটা দিতেই দাঁড়িয়ে আছি।’
ঈশা কাগজটা নিয়ে চলে গেল।
রাতে একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এল। আমি জানি কে ফোন করেছে—
-‘হ্যালো ঈশা।’