পুরো হাতার শার্ট

>শীত এলেই ছেলেদের হ্যাঙারে ঝুলতে থাকে শার্ট। আরও খোলাসা করে বললে, পুরো হাতার শার্ট। শীতকাল বলে কথা। আর পুরো হাতার শার্টে শীত যেমন ঠেকানো যায়, তেমনি ফ্যাশনটাও করা যায় ভালোভাবেই
‘মেয়েটা বাঁকা করে চুল বাঁধে প্রেম করে
ছেলেটাও পরে দেখ ফুলহাতা শার্ট।’
তপুর এই গানের লাইনের মতোই সত্য ছেলেদের জন্য পুরো বা ফুল হাতা শার্ট। ছেলেদের স্টাইল বা ফ্যাশনে একহাত নেওয়া মানেই ফুল হাতা শার্ট। কখনো বুক খোলা, কখনো কলার তোলা। শার্টের লম্বা হাতা গুটিয়ে থ্রি–কোয়ার্টার করে না নিলে যেন ভাবটাই জমে না।

বৈচিত্র্যে ভরা
ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে গেলেও একটা স্টাইল আসবেই—শার্টের হাতা তুলতে তুলতে তাকানো। সারা বছরের তুলনায় শীতে ফুল হাতা শার্টের বাজার বেশি রমরমা থাকে। তৈরি হয় নতুন নতুন নকশা। ফরমাল শার্টের তো একটা নিজস্ব ধরন আছে। একরঙা, নয়তো চেক বা চৌকো। কিন্তু ক্যাজুয়াল শার্ট মানে হাজারটা নকশা, বিকল্প দেখতে দেখতে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ছেলেদের ফুল হাতার শার্টে বৈচিত্র্য ভরপুর।
ফ্যাশন হাউস জেন্টল পার্কের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার সাহাদাত হোসেনের সঙ্গে কথা বলেও একই ইঙ্গিত পাওয়া গেল, এই সময়ে ছেলেদের জন্য পোশাক মানেই জ্যাকেট আর ফুল হাতা শার্ট। নিচে একটা টি-শার্ট পরে তার ওপর মোটা কাপড়ের একটা শার্ট পরে নিলে শীত পালাবে। আবার স্টাইলও হবে ঠিকঠাক।
মোটা কাপড়ের শার্ট
মোটা শার্ট বাছাই করতে গেলেই আগে দেখা মিলবে জিনস কাপড়ের। জিনস ওয়াশ করে আরামদায়ক শার্ট তৈরি হচ্ছে আজকাল। ওয়াশের ধরনও নানা রকম। অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে নীল জিনসের চেহারা বদলে করা হচ্ছে হালকা নীল, তামাটে বা কালচে রং। স্টোন ওয়াশও এখন দারুণ জনপ্রিয় জিনসের কাপড়ে। জিনসে আরও করা হচ্ছে ডেস্ট্রয় ওয়াশ, সানব্লাস্ট ওয়াশ। আর এসব ওয়াশের প্রধান কারণ, জিনসকে আরও আরামদায়ক করা, আরও নরম করা।
শার্ট তৈরির পর স্টোন ওয়াশের জায়গাগুলোতে, বিশেষভাবে এমব্রয়ডারির নকশা করা হচ্ছে। কারণ, পোশাকে বছরজুড়ে নানা রকম এমব্রয়ডারির চল থাকবে।
সেইলরের পুরুষ বিভাগের ডিজাইনার রাজীব কুমার ভাওয়াল বলেন, শুধু ওয়াশ না, শার্টের কাট ও সেলাইয়ে ভিন্নতা এসেছে অনেক। তবে ছেলেদের পোশাকের নকশায় যেহেতু ছোট ছোট পরিবর্তন আসে, তাই অনেক সময় সহজে নজরে পড়ে না।

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে
এবার আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে জনপ্রিয়তা থাকবে কেমো বা মিলিটারি প্রিন্টের শার্ট। ফুল হাতার কেমো প্রিন্টের শার্টে মিলিটারি স্টাইল বিভিন্ন মোটিফের ব্যাজ ব্যবহার করা হয়েছে। এই শার্টে করা হয়েছে অ্যানজাম ওয়াশ, যাতে কাপড়টা পরার উপযোগী বা নরম হয়। কুল ডাই করা শার্টও আছে বাজারে। যেখানে শার্টের ওপরের অংশে এক রং আবার নিচের অংশে থাকে আরেক রং।
ছোপছাপের শার্ট
প্রকৃতি ও নানা রকম পশু–পাখির প্রিন্ট এবারও শার্টে আছে। এর মধ্যে পাখি, ডাইনোসর, কুমির, প্রজাপতি, খরগোশ, পাতা, ফুল ইত্যাদি। কলারের নকশায় দেখা গেল খাটো কলার, লম্বা কলার, ব্যান্ড কলার ও রাউন্ড নেকের কলার। বুটি বুটি সুতার কাজও ফুল হাতার শার্টে চোখে পড়ছে, যা শার্টের মূল রঙের অনুপ্রেরণাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে।

সেলাই মোটা সুতায়
সুতি শার্টের মধ্যে এখন বেশি দেখা যাচ্ছে মোটা সুতার ব্যবহার। বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতাদের মধ্যে মোটা শার্টের চাহিদা দেখা যাচ্ছে। সবাই শীত নিবারণের জন্য এই মোটা শার্ট কিনছেন। অনেকে তো খাদির কাপড়ে তৈরি শার্টও পরছেন।
তবে মূল খাদি এখন হাত তাঁত থেকে যান্ত্রিক তাঁতে বেশি হওয়ায় সুতা চিকন ও নরম হয়ে পড়েছে। সেসব আবার রঙিনও হয়ে উঠছে। ছেলেদের পোশাকে সবুজের নানা শেড এবার বেশি চলবে। সেটা শার্টের রং দেখেও বোঝা যাচ্ছে। আর এই মৌসুমে পোশাকে কালচে বা ইন্ডিগো রং বেশি পরতে দেখা যায়। শার্টে এই দুটি রং ছাড়াও নানা উজ্জ্বল রং দেখা যাচ্ছে।