হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে দরকার যেসব অভ্যাস
ছোট্ট কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন জীবনটাকে বদলে দিতে পারে। সুস্থ রাখতে পারে শরীরের হৃদ্যন্ত্রকে। কিন্তু ব্যস্ততা বা অবহেলার কারণে শরীরের এ গুরুত্বপূর্ণ অংশটির যত্ন নেওয়ার কথা ভুলেই যাই আমরা।
হৃদ্যন্ত্রটিকে সুস্থ রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া। এ জন্য দৈনন্দিন জীবনের কিছু কিছু অভ্যাস অদল-বদল করতে হবে। কিছু অভ্যাস ছাড়তে হবে, আবার কিছু সাদরে গ্রহণ করতে হবে। তবেই হৃদ্যন্ত্রটা ঠিকভাবে দম ফেলতে পারবে। আজকেই নিতে পারেন এমন কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা। ভালো খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম—এসব অভ্যাস নিজের পাশাপাশি সন্তান ও পরিজনদের মধ্যেও গড়ে তুলতে হবে।
ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে খাদ্যতালিকায় যে সামান্য পরিবর্তন আনতে হবে—
১. অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় বা জুস পরিহার করা ভালো। বিকল্প হতে পারে বিশুদ্ধ পানি ও চিনিমুক্ত জুস।
২. মিষ্টিজাতীয় খাদ্যের বদলে তাজা ফল।
৩. দিনের পাঁচটি ভাগের খাদ্যতালিকায় ফল ও সবজি রাখুন। এসব সবজি ও ফলমূল তাজা, শুকনো বা হিমায়িতও হতে পারে।
৪. নির্ধারিত মাত্রার বেশি অ্যালকোহল গ্রহণ করা যাবে না।
৫. প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোতে খুব বেশি লবণ থাকে এবং এতে চর্বির পরিমাণও থাকে বেশি। এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬. স্কুলের টিফিন বা কর্মক্ষেত্রে খাওয়ার জন্য নিজের স্বাস্থ্যকর দুপুরের খাবার নিজেই তৈরি করুন।
ব্যায়ামের যে অভ্যাস তাজা রাখে হৃৎপিণ্ডকে—
১. সপ্তাহের পাঁচ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট সময় নিয়ে হালকা ও মাঝারি ধরনের ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অথবা সপ্তাহে ৭৫ মিনিট জোরালো ধরনের কিছু কাজ ভালো রাখবে হৃদ্যন্ত্রকে।
২. খেলা, কাজ করা, নাচ, ঘরের কাজ—সবই কাজ হিসেবে গণ্য হবে।
৩. আরও বেশি কর্মক্ষম করে তুলুন নিজেকে। লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। গাড়ি ছেড়ে সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৪. পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে শরীরচর্চার অভ্যাস সময়টাকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।
৫. ইন্টারনেটে অনেক ধরনের শরীরচর্চার অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যায়। সেগুলো ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
ধূমপান পরিহার করুন—
বলা হয়ে থাকে ধূমপানে বিষপান। কেননা এই অভ্যাসটি হৃৎপিণ্ডসহ শরীরের অনেক ধরনের অসুখের জন্য দায়ী। হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখতে সবচেয়ে উপযোগী হলো ধূমপান পরিহার করা। দুই বছর ধরে ধূমপান থেকে বিরত থাকলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। ধূমপান করেন না এমন ব্যক্তিদের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (সিভিডি) বা হৃদ্রোগের হার অনেক কম। অনেক সময় পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে মানুষ। তাই ধূমপান পরিহার করলে কেবল নিজে নয়, আশপাশের মানুষগুলোর হৃদ্যন্ত্রকেও ভালো রাখা যায়। তীব্র মানসিক ইচ্ছা ও জীবনযাপনের কিছুটা পরিবর্তন আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করতে পারে। তবে অনেক সময় বহুদিনের এই অভ্যাস বাদ দেওয়া সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া