পাটনায় বন্যার পানিতে তরুণীর ফটোশুট নিয়ে হইচই
ভারী বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে রাস্তা। সেই পানি পেরিয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ সাইকেলে করে পাড়ি দিচ্ছে রাস্তা। শ্রমজীবী কেউ কেউ চলছেন ভ্যান নিয়ে। চারপাশের এমন বিপর্যস্ত পরিবেশের মধ্যে পানিতে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন এক তরুণী। পরনে লাল গাউন, মুখে প্রসাধন, পায়ে কালো হাইহিল। জমকালো সাজের তরুণীকে দেখে মনে হচ্ছে, হয়তো কোনো পার্টিতে যাচ্ছিলেন, পথে জলাবদ্ধতা দেখে নেমে পড়েছেন সেখানেই। তবে বিষয়টি মোটেও তা নয়। এটা ছিল ওই তরুণীর ফটোশুট।
আজ মঙ্গলবার এনডিটিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ভারতের বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনায় তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে বহু বাড়ি ও হাসপাতালে পানি উঠে গেছে। বহু এলাকায় প্রায় বুকসমান পানি। শহরের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ওই তরুণীর ফটোশুট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে হইচই। কেউ কেউ ছবির ভাবনাটিকে ব্যতিক্রম উল্লেখ করে প্রশংসা করলেও অনেকে তুমুল নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
একাধিক ছবির এই সিরিজের নাম ‘মারমেইড ইন ডিজাস্টার (বিপর্যয়ে মৎস্যকন্যা)’। যে তরুণী এই মৎস্যকন্যার ভূমিকায়, তাঁর নাম অদিতি সিং। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজির ছাত্রী। আর এই ছবিগুলোর আলোকচিত্রী হলেন সৌরভ অনুজ। তিনি ছবিগুলো ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
আলোকচিত্রী সৌরভ অনুজ ফেসবুকে লিখেছেন, পাটনার বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরার জন্য শুধু এই ফটোশুট করা হয়েছে। এটাকে কেউ ভুলভাবে নেবেন না।
প্রতিক্রিয়ায় অনেকে পাটনার বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরার জন্য সৌরভ ও অদিতিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তবে অনেকেই সমালোচনা করেছেন এই বলে যে এখানে নিজেদের স্বার্থে বন্যাকে রোমান্টিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। একজন লিখেছেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে আপনারা এভাবে রোমান্টিসাইজ বা মহিমান্বিত করতে পারেন না।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ফটোশুট শেষ হলে বিপর্যস্ত কাউকে সাহায্য করুন।’
তবে অনেকে অদিতি ও সৌরভের পাশেও দাঁড়িয়েছেন। একজন লিখেছেন, ‘ভাবনাটা দারুণ। কেন সবাই এই ছবি দেখে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। অন্ধ আবেগ নিয়ে সমালোচনা করবেন না।’
পাটনায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপনস ফোর্সের তিনটি দলকে মোতায়েন করা হয়েছে।