পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন?
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এখন ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন। চোখে সহ্য করতে পারছেন না আলো। বাড়িতেই আলোহীন কক্ষে থাকছেন। চোখে পরছেন আলো নিরোধক চশমা। আজ কলকাতার দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকায় এ কথা বলা হয়েছে।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এখন বয়স ৭৪ বছর। একজন সফল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন তিনি। ছিলেন একজন নাট্যকার ও লেখকও। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও জনসংযোগমন্ত্রী সেই ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। এরপর ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৩ মে পর্যন্ত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালে বামফ্রন্টের একটানা ৩৪ বছর শাসনের পর রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয় ঘটে বামফ্রন্টের। এরপরই তিনি বিদায় নেন। নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সারা জীবনই অতি সাধারণভাবে জীবনযাপন করেছেন। সাদা ধুতি আর পাঞ্জাবি ছিল তাঁর পোশাক। চলতেন সাধারণ একজন মানুষের মতো। থাকতেন দক্ষিণ কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট একটি দুকক্ষের বাসায়। এখনো তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে।
সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আজ চোখের কঠিন রোগে আক্রান্ত। দিন দিন হারাচ্ছেন দৃষ্টি। আলো দেখলে চোখে যন্ত্রণা হয়। তাই দিনের বেলায় তিনি ঘরের জানালা বন্ধ করে থাকছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে দিনে আলো জ্বালাতে নিষেধ করেছেন।
যুগশঙ্খ পত্রিকা সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘চোখের সমস্যায় খুব কষ্ট পাচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমছে তাঁর। তাঁর চোখের সমস্যা দীর্ঘদিনের।’ সেলিম আরও বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে একবার তিনি এই চোখের চিকিৎসা করানোর জন্য কিউবা গিয়েছিলেন। তখনই সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, বয়স বাড়লে চোখের সমস্যা আরও বাড়বে তাঁর।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সক্রিয় রাজনীতি থেকে অনেকটা সরে গেছেন। গত কয়েক বছরে তিনি কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসভবনে গিয়েছিলেন। এই অসুবিধা সত্ত্বেও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্য কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে যোগ দিতেন। তবে গত মার্চ থেকে চোখের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় কার্যত তিনি আর বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।