পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-তৃণমূল পাল্টাপাল্টি স্লোগান
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি স্লোগান নিয়ে এখন উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সমর্থকেরা তাঁর উদ্দেশে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছে। বিজেপির নবনির্বাচিত সাংসদ অর্জুন সিং ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা ১০ লাখ পোস্টকার্ড মমতার বাড়িতে পাঠানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। খেপে গিয়ে মমতাও পাল্টা স্লোগানের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রথম শুরুটা করেছে বিজেপিই। যেখানেই মমতা যাচ্ছেন, সেখানেই বিজেপির সমর্থকেরা মমতার বহরের সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় চন্দ্রকোণায় মমতার বহরের সামনে প্রথম এই স্লোগান দেয় বিজেপি। এরপর থেকে চলছেই।
লোকসভা নির্বাচনের পর এবার তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করা এলাকার ‘বাহুবলী’ নেতা অর্জুন সিং সাংসদ হয়েছেন। তিনি হারিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদিকে। অর্জুন সিং জেতার পর ব্যারাকপুর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, এই সংঘর্ষের জেরে তাঁদের ৪০০ কর্মী ও সমর্থককে বাড়িছাড়া করা হয়। প্রতিবাদে দলটির নেতা-কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার নৈহাটি পৌরসভার সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন । কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পথে ভাটপাড়ায় মমতার বহরের সামনে বিজেপির সমর্থকেরা জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয়। এতে খেপে যান মমতা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে মমতা সেখান থেকে নৈহাটির অবস্থান ধর্মঘটে যোগ দেন।
মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা দেন, এবার থেকে তৃণমূল জয় শ্রীরাম ধ্বনির পাল্টা ধ্বনি দেবে ‘জয় হিন্দ’। জয় হিন্দ বাংলা ও হিন্দিতে যুগ যুগ ধরে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা দেন ফোনালাপে বাংলার মানুষ কুশলবিনিময়ে ‘জয় বাংলা’ বলবেন।
বিজেপিকে রুখতে মমতা দুটি বাহিনী গঠন করার কথা ঘোষণা দেন। একটি পুরুষদের বাহিনী ‘জয় হিন্দ বাহিনী’। নারীদের বাহিনী ‘বঙ্গজননী বাহিনী’। এই দুই বাহিনীর নেতাদের নামও ঘোষণা করে দিয়েছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকসহ দলের অন্যান্য নেতারা গতকাল শনিবার ব্যারাকপুর এলাকার কাঁচড়াপাড়ায় দলীয় সভা করতে যান। তৃণমূল কার্যালয়ে সভা শুরু হলে বিজেপির সমর্থকেরা এসে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দেওয়া শুরু করে। এ নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সংঘর্ষ বাধে । পুলিশও এই সংঘর্ষ থামাতে বিজেপির কর্মীদের ওপর লাঠিপেটা করে। এতে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে রেল চলাচল অবরোধ করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির নবনির্বাচিত সাংসদ অর্জুন সিং ঘোষণা দেন ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা ১০ লাখ পোস্টকার্ড পাঠানো হবে দিদির বাড়িতে। প্রতিটি পোস্টকার্ডে লেখা থাকবে ‘জয় শ্রীরাম’। এই পোস্টকার্ডগুলো নিকটবর্তী পোস্টবক্সে ফেললেই তা মমতার কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে যাবে। সেই সঙ্গে তাঁর সচিবালয় নবান্নেও পৌঁছে যাবে।