হামলার ভিডিও থামাতে হিমশিম ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারকে। এর আগে মসজিদের ভেতর ঢুকে বন্দুকধারীর নির্বিচারে মুসল্লি হত্যার ভয়াবহ ভিডিওটি না ছড়ানোর নির্দেশ দেয় নিউজিল্যান্ড পুলিশ। এরপরও ভিডিওটি কপি হয়ে ছড়িয়েই যাচ্ছিল।
গতকাল শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেনটন হ্যারিসন টারান্ট নামের এক অস্ট্রেলীয় যুবক। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। দুই মসজিদে হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। এর মধ্যে আল নুর মসজিদে ৪১ জন এবং লিনউড মসজিদে সাতজন নিহত হন। একজন হাসপাতালে মারা যান। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০ জন।
হামলার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পুরো ঘটনা লাইভ করেন হামলাকারী। ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্দুকধারী হামলার আগে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্বয়ংক্রিয় বন্দুক নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে মসজিদের দিকে যাচ্ছেন। মসজিদের প্রবেশকক্ষ থেকেই মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে বৃষ্টির মতো গুলি করা শুরু করেন। মসজিদের ভেতর ছুটোছুটিরত মুসল্লিদের প্রতি টানা গুলি করতে থাকেন। এরপর মসজিদের এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে ঘুরে ঘুরে গুলি করতে থাকেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে যাঁরা মসজিদের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের দিকে ফিরে ফিরে গুলি করছিলেন তিনি।
ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া শুরু করলে নিউজিল্যান্ড পুলিশ টুইটারে ভিডিওটি প্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক করে। পুলিশ ফুটেজটি অনলাইন থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করলেও তা অনলাইনে বহু সময় পর্যন্ত দেখা যায়।
ফেসবুকের অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জন্য নীতিনির্ধারণ–বিষয়ক পরিচালক মিয়া গারলিক এক বিবৃতিতে বলেন, লাইভস্ট্রিম হতে থাকা ভিডিওটি নিয়ে নিউজিল্যান্ড পুলিশ ফেসবুকে সতর্ক করার কিছু সময়ের মধ্যে হামলাকারীর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে ঠিক কখন ভিডিওটি সরানো হয়, তা নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় ফেসবুক।
টুইটার জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত অ্যাকাউন্টটি তারা স্থগিত করেছে এবং তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নিতে কাজ করছে।
গুগল মালিকানাধীন ইউটিউব জানিয়েছে তারা সহিংস ভিডিওটি সরিয়ে নিয়েছে। গুগলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে সতর্ক করার পরপরই তাঁরা ভিডিওটি সরিয়ে নিয়েছেন। ভিডিওটি কতক্ষণ প্রচার হওয়ার পর তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে ইউটিউবও অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তবে প্রতিষ্ঠানগুলো ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও কপি হয়ে যাওয়া ভীতিজনক ভিডিওটিকে ফেসবুক, ইউটিউবে ঘুরতে দেখা যায়। ফলে, এ ধরনের ভিডিও নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।