কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোটে সমঝোতা
ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলকে হারাতে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব মেনে নিল বামফ্রন্ট। কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়েছে, গত নির্বাচনে কংগ্রেস যে ৪ আসনে ও বামফ্রন্ট যে ২ আসনে জয়ী হয়েছিল, সেখানে পৃথক প্রার্থী দেওয়া হবে না। বাকি আসনে আসন সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট লড়বে ২৫টি আসনে আর কংগ্রেস লড়বে ১৭টি আসনে। বামফ্রন্টের ২৫টি আসন ভাগ হবে ফ্রন্টের অন্যান্য শরিকদের মধ্যে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন বামফ্রন্টের। ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জের সাংসদ হন মহম্মদ সেলিম আর মুর্শিদাবাদের সাংসদ হন বদরুদ্দোজা খান। দুজনই সিপিএমের। রায়গঞ্জ আসনে গত নির্বাচনে দীপা দাসমুন্সি মাত্র ১ হাজার ৭০০ ভোটে হেরে যান সেলিমের কাছে। দীপা দাসমুন্সি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জায়া। তিনি এবার চাইছিলেন রায়গঞ্জ আসনে নির্বাচন করতে। কিন্তু মহম্মদ সেলিম এ আসনের জন্য অনড় থাকলে জটিলতা দেখা দেয়। কংগ্রেস বামফ্রন্টকে অনুরোধ করে তারা যেন রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদের আসন দুটি এবার ছেড়ে দেয়। প্রস্তাব মানতে নারাজ হওয়ায় কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মধ্যে জোট রাজনীতিতে ফাটল ধরে।
গত শুক্রবার বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এককভাবে ঘোষণা করেন তাদের জোটের দুই প্রার্থীর নাম। রায়গঞ্জে মহম্মদ সেলিম এবং মুর্শিদাবাদে বদরুদ্দোজা খানের নাম। শুরু হয় জটিলতা। হুমকির মুখে পড়ে জোট রাজনীতি। আসরে নেমে পড়ে কংগ্রেস এবং বামদলের শীর্ষ নেতারা। এবার কংগ্রেস এবং বামদল আলাদা নির্বাচন করলে আখেরে লোকসান হবে কংগ্রেস-বামফ্রন্টের। লাভ হবে বিজেপি এবং তৃণমূলের। দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহু গান্ধীর আলাপ আলোচনার পর ঠিক হয়, দুই দল যে ৬টি আসনে গত নির্বাচনে জিতেছিল, সেই আসনে পৃথক প্রার্থী দেওয়া হবে না। বাকি আসনের সমঝোতা করবে জোট।
ভারতে এপ্রিল-মে মাসে ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে লোকসভার ৪২টি আসন। ১১ মার্চ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
এবারে তৃণমূল ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনেই জিততে চলেছে তারা। বিজেপি বলেছে, তাদের লক্ষ্য ২৩টি আসন। গত ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে এখানে বিজেপি পেয়েছিল দুটি আসন।
এদিকে, জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে বামফ্রন্টের একটি নির্বাচনী জোট। সে জোট নিয়েই বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এগিয়েছে। তারাও বারবার ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল রুখতে তারা একসঙ্গে লড়বে। তারা চাইছে এই রাজ্যে অসাম্প্রদায়িক শক্তির জয়।