সুদানে জরুরি অবস্থা জারি
সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। গতকাল শুক্রবার এ ঘোষণার মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় সরকার বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং সবগুলো প্রাদেশিক গভর্নরকে বরখাস্ত করেন। জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। পরে তিনি গভর্নরদের শূন্য পদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেন।
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, এর আগে সুদানের জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সার্ভিস (এনআইএসএস) জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট বশির পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রেসিডেন্ট বশির সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
এদিকে প্রেসিডেন্টের জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রতিবাদে ওমদুরমান শহরের সড়কে বিক্ষোভ করে বিক্ষোভকারীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
সুদানের রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ওমর-আল বশিরের ভাষণ। ভাষণে প্রেসিডেন্ট বশির বলেন, ‘দেশে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করছি। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ে সরকারের বিলুপ্তি ঘোষণা করছি।’ প্রেসিডেন্ট বলেন, বিক্ষোভকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
জরুরি অবস্থা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট বশির দুটো অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ১৮টি প্রদেশে শাসনে সেনা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেন। তবে বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদের মধ্যে পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, আইন ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রীসহ পাঁচ মন্ত্রীকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে বলেন।
খাবার ও জ্বালানির ওপর ভর্তুকি ছেঁটে ফেলার প্রতিবাদে গত ডিসেম্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ পরে বশিরের ৩০ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে পরিণত হয়।
বিক্ষোভ শুরুর পর এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। অধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৪০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। বশির প্রেসিডেন্ট পদ না ছাড়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিক্ষোভ আয়োজকেরা।
১৯৮৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন বশির। ৭৫ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট বেশ কয়েক বার জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। বিক্ষোভের বিষয়ে শুরুতে অবজ্ঞার সুরে মন্তব্য করতেন তিনি।