দিন পাঁচেক আগে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার ছেলে তেজ ভূপেন হাজারিকা আসামের নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বলেছিলেন, তাঁদের পরিবার তাঁর বাবাকে দেওয়া ভারতরত্ন সম্মান গ্রহণ করবে না। কারণ, তাঁর বাবা সব সময় আসামের মানুষের পাশে ছিলেন। অথচ গতকাল শুক্রবারই তেজ হাজারিকা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন। জানালেন, তাঁদের পরিবার ভারত সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান গ্রহণ করবে। এর মধ্যে চিঠি দিয়ে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়েছে।
গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ভূপেন হাজারিকাকে মরণোত্তর ‘ভারতরত্ন’ সম্মান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ভূপেন হাজারিকার জন্ম আসামের সাদিয়ায় সেই ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। ৮৫ বছর বয়সে ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই হাসপাতালে তিনি মারা যান। ভূপেন হাজারিকা আসামের মানুষ হলেও তিনি ছিলেন বাঙালিদের মনের ভালোবাসার এক বিরাট শিল্পী। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় প্রচুর গান গেয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের জন্যও তিনি অনেক গান গেয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যে গানগুলো গেয়েছিলেন, তা শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রেখেছে এ দেশের মানুষ। সেই অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০১১ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ দিয়েছে।
১৯৯২ সালে ভূপেন হাজারিকা পেয়েছেন ভারতের সংস্কৃতি অঙ্গনের সর্বোচ্চ সম্মান ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পদক। আরও পেয়েছেন ২০০৯ সালে ‘আসামরত্ন’ পদক, ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’ পেয়েছেন ২০০১ সালে, ‘পদ্মবিভূষণ’ পেয়েছেন ২০১২ সালে। পেয়েছেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।
ভূপেন হাজারিকার মরণোত্তর ‘ভারতরত্ন’ সম্মানপ্রাপ্তির খবরে এক টুইটবার্তায় অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন, ‘ভূপেন হাজারিকার গান ও সংগীত প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর এই গানে ন্যায়, ঐক্য আর সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা বিভিন্ন সময় ধ্বনিত হয়েছে। তিনি ভারতীয় সংগীতকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ভূপেনদাকে ভারতরত্নœদেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাযথ হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি।’