গরু নিয়ে লেজেগোবরে বিএসএফ!
ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের সময় জব্দ করা গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সর্বোচ্চ আদালতের এক আদেশের কারণে কসাইদের কাছে নিলামে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারছে না বিএসএফ। আবার এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে একটি আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। তাতে বলা হয়েছিল, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন মেনে জব্দ করা গবাদিপশু বিক্রি করতে হবে। আর এই আদেশেই তৈরি হয়েছে গন্ডগোল। কারণ স্বাভাবিক নিলামে গরু-ছাগল কেনায় অংশ নেন কসাইরা। ফলে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা এড়ানো সম্ভব হয় না। এই কারণে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারছে না বিএসএফ।
বিএসএফ সূত্রের বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, কৃষ্ণনগর, বেরহামপুর ও মালদার চারটি সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের হেফাজতে প্রায় এক হাজার গবাদিপশু রয়েছে। এদিকে উপযুক্ত দেখভালের অভাবে এসব গবাদিপশুর মৃত্যুও হচ্ছে। গত সপ্তাহেই মারা গেছে প্রায় এক ডজন গবাদিপশু।
বিএসএফ বলছে, দক্ষিণ বাংলার গুয়াহাটি এলাকায় কমপক্ষে ৮০০ গবাদিপশু জব্দ অবস্থায় আছে। গত ডিসেম্বরে এই সংখ্যা দেড় হাজারে পৌঁছেছিল। বিএসএফের জন্য এসব গবাদিপশুর দেখাশোনা করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে সম্প্রতি কিছুসংখ্যক গবাদিপশু স্থানীয় গোশালাগুলো ও কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসী এসব গরু-ছাগল নিতে চান না। গত ডিসেম্বরে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাছে প্রায় দুই হাজার গবাদিপশু হস্তান্তর করে বিএসএফ।
এদিকে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা এসব গরু-ছাগল কারও ঘাড়েও চাপাতে পারছে না বিএসএফ। স্থানীয় পুলিশ এগুলো গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। রাজ্য পুলিশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মামলা না করলে একটি গরু-ছাগলও তারা নেবে না। আর শুধু মামলাই নয়, সঙ্গে দিতে হবে চোরাচালানে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদেরও! তবেই জব্দ গরু-ছাগল নিজেদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।