অমৃতসরে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬১ জন মানুষ। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই ট্রেনের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ট্রেনের চালক দাবি করেছেন, তাঁকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া হয়েছিল। শত শত মানুষ রেললাইনে দাঁড়িয়ে থাকবেন—এমন কোনো ধারণা তাঁর ছিল না।
পাঞ্জাব পুলিশ ওই ট্রেনচালককে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, রেললাইনের কাছে রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহের অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাঁরা আগে থেকে কিছু জানতেন না।
ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের এক খবরে জানানো হয়, পুলিশ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কোনো হদিস পায়নি। পুলিশ ওই ঘটনাস্থলের পাশে দায়িত্বরত লাইনম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তিনি রেলচালককে কিছু জানাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জিনিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের অমৃতসরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। আহত ৭২। আহত ব্যক্তিদের অমৃতসরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দশেরায় রাবণ দহনের অনুষ্ঠান চলছিল অমৃতসর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ধোবি ঘাটে। কমপক্ষে সাত হাজার লোক রাবণ দহন দেখতে জড়ো হন বলে পুলিশের দাবি। তাঁদের মধ্যে অনেকেই দাঁড়িয়েছিলেন ধোবি ঘাটের জোড়া ফটক ক্রসিংয়ের কাছে রেললাইনের ওপর। কারণ ওখান থেকে দহনের দৃশ্য অনেক ভালো দেখা যায়। রাবণ দহন দেখতে এসে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ৬১ জন। ওই সময় রেললাইনে দাঁড়িয়ে রাবণবধ দেখছিলেন ৫০০ থেকে ৭০০ মানুষ। তখন আপ ও ডাউন লাইনে দুটি ট্রেন আসে। দ্রুতগতির ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ৬০ জন। জখম বেশ কয়েকজন। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল।
রেল ও আয়োজকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ ঘটনায় অনেকেই ওই এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কুশপুত্তলিকা দাহের সময় আতশবাজি পোড়ানো হচ্ছিল। এ কারণে দর্শনার্থীরা ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পাননি। আতশবাজির স্ফুলিঙ্গ থেকে বাঁচার জন্য কিছু মানুষ রেললাইনের ওপর উঠে পড়েন। ওই সময় ট্রেনটি চলে আসে। স্থানীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাখবির সিংহ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং উদ্ধারে দ্রুত তৎপরতা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে। আহত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
রাজ্যের রেলমন্ত্রী মনোজ সিনহা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত করার কথা বলেন।