ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের পর সুনামিতে নিহত প্রায় ৪০০
ইন্দোনেশিয়ায় গতকাল শুক্রবার আঘাত হানা ভূমিকম্পের পর সুনামিতে মৃত মানুষের সংখ্যা ৩৮০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল দেশটির সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামি হয়। সুনামির ফলে সৃষ্ট প্রায় ১০ ফুট উঁচু ঢেউ পালু শহরকে ভাসিয়ে দেয়।
এখনো ভূমিকম্পের পরাঘাত হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে হাজারো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বাদ যায়নি হাসপাতাল, হোটেল, শপিং মল।
ভূমিকম্প ও সুনামির এই ঘটনায় বিদ্যুৎব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ভূমিধসে শহরের প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ।
দেশটির উদ্ধারকারীরা উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তাঁদের উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগবিষয়ক সংস্থা বলছে, ভূমিকম্প ও সুনামিতে এখন পর্যন্ত ৩৮৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। আর আহত হয়েছে ৫৪০ জন।
দুর্যোগবিষয়ক সংস্থার এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ভূমিকম্প ও সুনামিতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। সুনামির পর উপকূলে অনেক মৃতদেহ দেখা গেছে। তাদের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। এই প্রাণহানি ভূমিকম্পে, নাকি ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামির কারণে হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
টিভি ফুটেজে দেখা যায়, অনেক আহত মানুষকে খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার এক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, ভূমিকম্প ও সুনামিতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এতে উদ্ধার তৎপরতায় বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া পালু বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজধানী জাকার্তা থেকে বিমানে করে পালু শহরে ত্রাণ পাঠাচ্ছে সেনাবাহিনী।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টার আগে পালু শহরে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তা তুলে নেওয়া হয়। এ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা।
ভূমিকম্প-সুনামির ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বেশ কিছু ভবন, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পালুতে থাকা বার্তা সংস্থা এএফপির একজন আলোকচিত্রী বলছেন, ঠিক ভূমিকম্পের কারণে, নাকি সুনামির আঘাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার লমবক দ্বীপে সিরিজ ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে ৫ আগস্টের ভূমিকম্পে দেশটিতে ৪৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশটিতে ২০০৪ সালে ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে। এতে লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটে।