আগে গোপনে যেতাম, এবার প্রকাশ্যে যাব: শাকিব খান
>ঈদে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ ও ‘নোলক’। এর মধ্যে পাসওয়ার্ড ছবির প্রযোজক শাকিব খান নিজে। বড় বাজেটের এই ছবি ঈদের সবচেয়ে আলোচিত ছবি হবে বলে প্রত্যাশার কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেমা নিয়ে তাঁর আগামী পরিকল্পনার কথাও বলেছেন এই নায়ক।
পাসওয়ার্ড নিয়ে প্রত্যাশা কেমন?
প্রত্যাশা অনেক। তবে বোদ্ধাদের কাছে এটা ভালো না-ও লাগতে পারে। যাঁরা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসেন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই এটি হবে উপভোগ্য একটি ছবি। একটি মৃতপ্রায় ইন্ডাস্ট্রিতে এই ছবিটি মানুষকে প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। চারপাশে শুধু হতাশার কথা শুনি—চলচ্চিত্রে আর কিছু হবে না। কিন্তু চাইলে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে ভালো কাজ সম্ভব। আমি মনে করি, এটি সব শ্রেণির মানুষের ছবি। ছবিটি দেখে সবাই বলবেন, বাংলাদেশেও বিশ্বমানের সিনেমা হয়।
ছবিটি নিয়ে এত আত্মবিশ্বাস কেন?
কারণ এটি ঈদের ছবি। ঈদের জন্য, ঈদের বাজেটে তৈরি। কোটি টাকা খরচ করে ছবির গানের শুটিং করা হয়েছে তুরস্কে; যেখানে নিয়মিত বলিউড ছবির শুটিং হয়। শুধু তা-ই না, এই ছবিতে বেস্ট টেকনিশিয়ানেরা কাজ করেছেন। দেশের বাইরে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ হয়েছে। মোটকথা, একটি ভালো ছবির জন্য যা যা দরকার, সব করা হয়েছে।
আপনি বলছিলেন বর্তমান ইন্ডাস্ট্রি মৃতপ্রায়। তাহলে ঝুঁকি নিলেন কেন?
২০১৪ সালে আমি যখন হিরো—দ্য সুপারস্টার নির্মাণ করি, তখনো ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তখন ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভয়াবহ খারাপ ছিল। ঢাকা তখন সবে থার্টি ফাইভ মিলিমিটার থেকে ডিজিটালে যাত্রা করেছে। প্রেক্ষাগৃহ ছিল, মেশিন ছিল না। সিনেমার বাজেট নেমে গিয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ লাখে। শাকিব খানের ছবির বাজেট ১ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল। তখন আমি আড়াই কোটির বেশি টাকা খরচ করে হিরো—দ্য সুপারস্টার বানাই। মুক্তির পর সেটা সুপার-ডুপার হিট হয়। আজকের শাকিব খানের জন্ম হয়েছে সেখান থেকে। আয় করেছি সেখান থেকেই। ঝুঁকি বলেন বা চেষ্টা বলেন, আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতেই করব।
ঈদের দিন ছবিটি দেখবেন কি?
অবশ্যই। আমি সব সময়ই ঈদের দিন গোপনে ছবি দেখতে যাই। তবে এবার প্রকাশ্যেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ছোট-বড় হলগুলোতে যাব।
আপনার অভিনীত নোলক ছবিটিও মুক্তি পাচ্ছে। সেটা নিয়ে বেশ জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ ব্যাপারে কিছু বলবেন?
নোলক নিয়ে পরিচালক ও প্রযোজকের মধ্যে কোর্ট-কাচারি হচ্ছে। এটি তাঁদের ব্যাপার। নোলক তো পাসওয়ার্ড-এর প্রতিযোগী না। প্রথমে এটি ভালোবাসা দিবসে মুক্তির কথা ছিল। এতে নবান্নের গান আছে। পরে পয়লা বৈশাখে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। এখন ঈদে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। নোলক আমারই ছবি। শুভকামনা রইল।
পাসওয়ার্ড ছবির তিনটি গান ‘পাগল মন’, ‘ঈদ মোবারক’ ও ‘আগুন লাগাইলো’ প্রকাশের পর আলোচনায় চলে এসেছে।
আগেই বলেছি, এই ছবির প্রতিটি বিষয় ঈদকে কেন্দ্র করে। এ জন্য বাজেটে আপস করা হয়নি। গানের কথা, সুর ও সংগীত থেকে শুরু করে শুটিংয়ে আলাদা যত্ন ছিল। তুরস্কের ব্যয়বহুল লোকেশনে গানগুলোর শুটিং করেছি। ভারতের খ্যাতিমান কোরিওগ্রাফার বাবা যাদব গানগুলোর নৃত্য পরিচালনা করেছেন। তিনটি গানেই কোটি টাকা বাজেট ছিল। দর্শকেরা গানে সেই স্বাদ পেয়েছেন বলেই গানগুলো আলোচিত হয়েছে।
এখন থেকে কি নিজের ঘর থেকে নিয়মিত ছবি নির্মাণ করবেন?
চলচ্চিত্রের এই মন্দা অবস্থায় আমার একটা দায়িত্ব আছে। আমি আমার জায়গা থেকে ভালো ভালো ছবি বানাতে চাই। নিজের ঘর থেকে বছরে অন্তত চারটি ছবি নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে।
ঈদে ছেলে আব্রামের জন্য কী উপহার কিনলেন?
এটি বলতে চাই না। একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ধরেন, আমি শাকিব খান যদি আমার ছেলের জন্য ঈদে অনেক দামি উপহার কিনি, কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক পরিবার আছে, যারা ছেলেকে কিছু দিতে পারে না। তাই আমার ছেলের উপহারের কথা পত্রিকায় পড়ে কারও মন খারাপ হোক, আমি চাই না।