>বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কর্মক্ষেত্রে নিজের ভাবনা, গবেষণা বা প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য আমরা অনেক সময় ‘পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’-এর আশ্রয় নিই। কিন্তু চমকপ্রদ উপস্থাপনের কাজে শুধু পাওয়ারপয়েন্ট নয়, আরও বেশ কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়। তেমনি কিছু সফটওয়্যারের কথা জানাচ্ছেন আলিমুজ্জামান।
গুগল স্লাইডস
অনলাইনে ‘প্রেজেন্টেশন’ তৈরি করে সেগুলো বন্ধুদের সঙ্গে বিনিময় করার সুযোগ থাকছে এই প্ল্যাটফর্মে। একটি গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে google.com/slides-এ প্রবেশ করে ধাপে ধাপে ব্যবহার করা যাবে এটি। চাইলে কয়েকজন বন্ধু একসঙ্গে, ঘরে বসেই অনলাইনে একটি প্রেজেন্টেশন বানিয়ে ফেলতে পারবেন। ‘গ্রুপ প্রেজেন্টেশন’-এর জন্য এটি খুবই কার্যকর। মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টের মতোই স্লাইডের আদলে বানানো যাবে পছন্দসই প্রেজেন্টেশন। ডাউনলোড করে অফলাইনেও ব্যবহার করার সুবিধা আছে।
স্লাইডস ডট কম
স্লাইড ব্যবহার করে উপস্থাপনের ধারণাটাই বদলে দিয়েছে স্লাইডস ডট কম (slides.com)। একটু টাকা খরচ হলেও নানা আঙ্গিকে নিজের ভাবনা উপস্থাপন করা যায়। এইচটিএমএল, সিএসএসের মতো ডিজাইনিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে স্লাইড বানানো যায়। অন্য বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হওয়ার ফলে মোবাইলেও প্রেজেন্টেশন বানানো যায়। এ ছাড়া মোবাইলকে রিমোট হিসেবে ব্যবহার করে বড় পর্দায় উপস্থাপন করার সুযোগ থাকছে স্লাইডস ডট কমে। একই লাইব্রেরিতে আগের প্রেজেন্টেশনে ব্যবহৃত সব উপকরণ সংগ্রহে থাকায় পুনর্ব্যবহার করা যায়। অনলাইনের অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্ম: ভিমিও, ইউটিউব থেকেও সরাসরি ভিডিও উপস্থাপন করা যায় এই সেবায়। অফলাইনে ব্যবহারের সুযোগও থাকছে স্লাইডস ডট কমে।
প্রেজি
স্লাইড থেকে ত্রিমাত্রিক প্রেজেন্টেশনের ধারণায় নতুন উপস্থাপন হলো প্রেজি। কোনো বড় বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে বেশ উপযোগী এটি। চমকপ্রদ নকশা, বিষয়ভিত্তিক থিম আপনার উপস্থাপিত বিষয়কে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। স্লাইডের আঙ্গিকে বানানো হলেও একটি বিভাগের মধ্যে ধাপে ধাপে ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশন ব্যবহারের সুবিধা থাকছে প্রেজিতে। prezi.com থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে এটি। কয়েক মাস পর সামান্য টাকা খরচ করলেই চমৎকার এই সফটওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যাবে ১ বছর।
ক্যানভা
ফটো এডিটর হিসেবে ক্যানভার সুপরিচিতি থাকলেও অনেকেই জানেন না যে ক্যানভার একটি অসাধারণ প্রেজেন্টেশন সফটওয়্যার আছে। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায় এই সফটওয়্যারটি। জিমেইল বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে www.canva.com/create/presentations/-এ অ্যাকাউন্ট খুলে কয়েক হাজার টেমপ্লেট থেকে পছন্দসই প্রেজেন্টেশন বানানো যাবে। চাইলে নিজের পছন্দের আদলেও সাজানো যাবে প্রেজেন্টেশনের নানা দিক। ক্যানভা ব্যবহার করে কম্পিউটারের ব্রাউজারেই অনলাইনে প্রেজেন্টেশন বানানো যায়। অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার পাশাপাশি নিজের ওয়েবসাইট-ব্লগেও সরাসরি উপস্থাপন করার সুযোগ থাকছে। ক্যানভায় বানানো প্রেজেন্টেশন পিডিএফ বা জেপিইজি ফরম্যাটে ডাউনলোড করে অফলাইনে দেখার সুবিধা থাকলেও পাওয়ারপয়েন্টে উপস্থাপনের উপায় নেই।
স্লাইড ডগ
অনলাইনে বিনা মূল্যে পাওয়া গেলেও এই সফটওয়্যার বেশ জনপ্রিয়। slidedog.com থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে এটি। একই সফটওয়্যার ব্যবহার করে আলাদা আলাদা মনিটরে ভিন্ন ভিন্ন প্রেজেন্টেশন দেখানো যায় স্লাইডডগে। বানানোর সঙ্গে সঙ্গেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এটি দেখানো যায়। স্লাইডডগ প্রেজেন্টেশনে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট বা এক্সেল থেকে সরাসরি তথ্য ব্যবহারের সুযোগও থাকছে। এ ছাড়া কোনটার পর কোন প্রেজেন্টেশন চলবে, সেটাও সময় বেঁধে ‘প্লে-লিস্ট’ আকারে সাজিয়ে দেওয়া যায়। বৈচিত্র্যপূর্ণ সব টেমপ্লেট ব্যবহার করে বানানো এই প্রেজেন্টেশনগুলো মোবাইলেও দেখা যাবে।