রেকর্ড গড়ল সৌদি আরামকো
তালিকাভুক্ত হয়েই রেকর্ড গড়ল সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো। গতকাল বৃহস্পতিবার রিয়াদ পুঁজিবাজারের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে রেকর্ড ২৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে এই জায়ান্ট তেল কোম্পানি।
এর আগে শীর্ষ ই-কমার্স কোম্পানি চীনের আলিবাবা ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়ে আড়াই হাজার কোটি ডলার মূলধন সংগ্রহ করেছিল।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কিছুটা নেতিবাচক সাড়া পাওয়ায় এখন দেশীয় ও আঞ্চলিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে আরামকোর। জ্বালানি খাতের বিশাল এ কোম্পানিটি এর আগে এক বিবৃতিতে জানায়, কোম্পানির মোট শেয়ারের দেড় শতাংশ বাজারে ছাড়া হবে। প্রতি শেয়ারের দাম হবে ৩০ থেকে ৩২ সৌদি রিয়াল (আট থেকে সাড়ে আট ডলার)। বৃহস্পতিবার শেয়ারের দাম ওঠে ৩২ সৌদি রিয়াল (অর্থাৎ ৮ দশমিক ৫৩ ডলার)।
অর্থনীতিকে আধুনিকীকরণ ও তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পরিকল্পনাতেই এই শেয়ার বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় বসার পর থেকেই সৌদি আরব তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, তারই অংশ হিসেবে এবার বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক এ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসা হয়েছে। দ্রুত কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে এবং নতুন শিল্প গড়ে তুলতে অর্থের প্রয়োজন সৌদির।
এটি প্রথমে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জে থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার কথা বলেছিল। এর মধ্যে রয়েছে রিয়াদের তাদাউল ব্যুরোস। এ ছাড়া দেশের বাইরে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের মতো বিদেশি এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে চেয়েছিল তারা। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা জলবায়ু পরিবর্তন, রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং করপোরেট স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করে আরামকোর এই পরিকল্পনা ফিরিয়ে দিয়েছে। এমনকি কোম্পানির মূল্য ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ নিয়েও আপত্তি করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
সৌদি আরবের বিপুল তেল সম্পদ উত্তোলনের জন্য ১৯৩৩ সালে সৌদি আরব ও ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির (পরবর্তী সময়ে শেভরন নামে পরিচিতি পায়) মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির পর প্রতিষ্ঠিত হয় আরামকো। ১৯৭৩ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে পুরো কোম্পানিটিই কিনে নেয় সৌদি সরকার। সৌদি আরামকো যে শুধু বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি তা-ই নয়, এটির পর যে কোম্পানিটি দ্বিতীয় স্থানে আছে, তার চেয়েও এটি বহু গুণ বড়।