শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব ভারতের
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৮টি পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করল ভারত। আজ রোববার থেকে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সম্প্রতি ভারতের ওপর থেকে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। ৫ জুন থেকে এই সুবিধা আর পাচ্ছে না ভারত। এ ছাড়া ভারত থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে কর কমাতে ভারতের প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই পাল্টা ব্যবস্থা নিল ভারত।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাঠবাদাম, আপেলের মতো পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। কোনো কোনো পণ্যে শুল্ক হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।
গত শুক্রবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জনস্বার্থে শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারত প্রথমে ২৯টি পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের কথা ভেবেছিল। পরে একটি পণ্য (চিংড়ি) বাদ দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৪২ কোটি ডলার, যা ২০০১ সালের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানিতে জিএসপিসুবিধা পেত ভারত। তবে সম্প্রতি তা বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন পণ্যে ভারতের উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মূলত, শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালের জুনে। গত বছরের মার্চে ভারতীয় অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের ওপর অধিক হারে আমদানি শুল্ক আরোপের কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত বারবার এই শুল্ক থেকে ছাড় পেতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আবেদন করে। তবে ওয়াশিংটন এতে সাড়া দেয়নি। এরপর দুই দেশের মধ্যে প্রায় এক বছর ধরে আলোচনা চলে। এ সময় ভারত শুল্ক আরোপ বাস্তবায়ন কয়েকবার পিছিয়ে দেয়। তা ছাড়া এই আলোচনায় ভারতকে জিএসপিসুবিধা দেওয়ার বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, ভারত জিএসপির যোগ্য কি না, তা তারা খতিয়ে দেখবে। পরে চলতি জুন থেকে এই সুবিধা উঠিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে, আগামীকাল সোমবার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা।