ঢাকায় বাড়তি ঝাঁজ পেঁয়াজের, বাজার ভেদে ভিন্ন দাম ছোলা-ডাল-চিনির
ঢাকার কারওয়ান বাজারে মাসের সদাই নিতে এসেছেন রুহুল আমিন। গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছেন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়তে পারে। বললেন, ‘রোজা আসতে না আসতেই জিনিসের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করে। পারলে আজই সব কিনে নেব। দু-দিন পরে এলে সবকিছু বাড়তি দামে কিনতে হবে।’
ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন, রোজার সময় কিছু নিত্য পণ্যের দাম বাড়বে এটা তো স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
যদিও রোজা আসতে প্রায় দু-সপ্তাহ বাকি। সদাই এর তালিকা এখনো হাতে না উঠলেও দাম বসে নেই। এরই মধ্যে বাজারে ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজের। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, রোজার বাজার শুরু হলে অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যেতে পারে।
অবশ্য গত বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, ভোগ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুত আছে। দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। আজ শুক্রবার রাজধানীর চারটি বাজার ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের দামটা বাড়তি। তবে আদা, রসুন, ডাল, ছোলা, চিনির দাম আগের মতোই আছে।
আজ রাজধানীর বাজার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা দরে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী হাসান সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই সপ্তাহের শুরুতে দেশি পেঁয়াজের দাম ৩৫-৪০ টাকা ছিল। তিন-চার দিন হলো বেড়েছে।’ আসন্ন রোজার কারণেই দাম বাড়তে শুরু করেছে বলছেন কোনো কোনো ব্যবসায়ী।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের ব্যবসায়ী সালাম মোল্লা বলেন, ‘রোজা আসলে তো সবকিছুর দামই বাড়ে। এইটা আর নতুন কী।’ আবার সরবরাহ কম বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট ও টাউন হলে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৪২-৪৫ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে। সুপার শপ স্বপ্নেও একই দাম। তবে পাড়ার গলির দোকানগুলোয় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি। তাঁরা দেশি পেঁয়াজ রাখছেন প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা। কারওয়ান বাজারেও পেঁয়াজের দাম একই রকম।
মো. সোবহান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, তিন-চার দিন আগে দেশি পেঁয়াজ ছিল ৩৮ টাকা। আর ভারতীয়টার দাম ৩০ টাকা। এ বাজারের ব্যবসায়ীরা পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি করেন ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়।
আদা-রসুনের দাম সব বাজারে প্রায় একই। এ দুটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকা পর্যন্ত।
ছোলা, ডাল ও চিনির দাম বাজার ভেদে একেক রকম। মোহাম্মদপুরের বাজারগুলোয় ছোলা প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা, মসুর ডাল ৬০-৭০ টাকা এবং চিনি ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে জিগাতলা বাজারসহ ধানমন্ডির বিভিন্ন দোকানে ছোলার দাম উঠেছে ১১০ টাকা পর্যন্ত। মসুর ডালের দাম প্রতি কেজি ৬৫-৮০ টাকা। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকায়। কারওয়ান বাজারে এক কেজি ছোলা ৭০-৯০, মসুর ডাল ৬০-৭০, চিনি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মো. ইমরান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘রোজার বাজার এখনো জমে নাই। আগামী সপ্তাহেই বাজার শুরু করব মানুষ। তখন দাম বাইড়া যাইতে পারে।’