ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জেএমবির তিন সদস্যের একজন হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসানকে ছিনতাই করা হয়েছে ভালুকা থানার যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামালের নির্দেশে। এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী কামাল হোসেন ওরফে সবুজ আজ বুধবার র্যাবের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
নিষিদ্ধঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের তিন জঙ্গিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন সময় টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ থেকে আটজনকে আটক করেছে র্যাব। তাঁদের উপস্থিতিতে আজ রাজধানীর উত্তরায় র্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিনতাইকারী দলটির দলনেতা কামাল হোসেন ওরফে সুবজ এসব তথ্য জানান।
আটক হওয়া অন্যরা হলেন মো. সোহেল রানা (২৮), মোরশেদ আলম (২২), আনোয়ার হোসেন (৪০), মো. বাছির উদ্দিন (২০), মো. ইউসুফ আলী (২০), মো. ইলিয়াস উদ্দিন (৩৪) ও আবু বকর সিদ্দিক (২৭)।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশাল ও ভালুকার মাঝামাঝি সাইনবোর্ড এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে এবং এক পুলিশকে হত্যা করে জেএমবির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা।
ছিনিয়ে নেওয়া তিন জঙ্গি হলেন জেএমবির মজলিসে শুরা সদস্য
সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন (৩৮), হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসান (৩৫) ও জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিজান ওরফে বোমা মিজান (৩৫)। এঁদের মধ্যে সালাহউদ্দিন ও হাফেজ মাহমুদ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও বোমা মিজান যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি।
ঘটনার দিন বিকেল নাগাদ ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গি নেতা হাফেজ মাহমুদকে টাঙ্গাইলের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রাতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন তিনি।
আজকের ব্রিফিংয়ে কামাল বলেন, ভালুকা থানার যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামালের নির্দেশে তাঁরা ছিনতাই করেছেন। তাঁদের দায়িত্ব ছিল হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়ার। বাকি দুজনের দায়িত্বে ছিল অন্য গ্রুপ। তাদের গ্রুপে নয়জন ছিল। এই কাজের জন্য তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
কামাল উদ্দিন আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সকাল আটটায় স্পটে যান তাঁরা। আগে থেকে যুবলীগের নেতা তাঁদের নির্দেশনা দেন। তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁরা অপারেশনে যান। রাকিবকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন কামাল উদ্দিন। একই সঙ্গে তিনি ভালুকা পাঁচগাঁও গ্রামের জাগরণ টিউটোরিয়াল হোম কোচিং সেন্টারের মালিক বলেও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এ টি এম হাবিবুর রহমান জানান, আটক হওয়া মো. ইলিয়াস উদ্দিন ও আবু বকর সিদ্দিক আদম ব্যবসায়ী। তাঁরা বাকি ছয়জনকে অর্থের বিনিময়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছিলেন।